সন্দ্বীপে প্রতিদিন বাড়ছে ডেঙ্গুর প্রকোপ

0 ৮৭৫,৪৭৭

সন্দ্বীপে প্রতিদিন ডেঙ্গুর প্রকোপ বাড়ছে।প্রতিদিন গড়ে ১৫ থেকে ২০ জন ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হচ্ছেন।উপজেলার সরকারি হাসপাতালে ডেঙ্গুর পরিপূর্ণ চিকিৎসা না থাকায় বেশিরভাগ রোগী ঘরে বসে চিকিৎসা নিতে হচ্ছে।তবে শারীরিক ভাবে দুর্বল রোগীকে উন্নত চিকিৎসার জন্য চট্টগ্রাম স্থানান্তর হচ্ছে।দ্বীপের সরকারি হাসপাতালে ডেঙ্গু পরীক্ষার ব্যবস্থা নেই।এতে ডেঙ্গু অনেক আক্রান্ত রোগীকে সনাক্ত করা সম্ভব হচ্ছেনা।তবে উপজেলায় এপর্যন্ত ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর খবর পাওয়া যায়নি।

সন্দ্বীপেরএকটি বিভিন্ন হাসপাতাল ঘুরে বর্তমানে ১২ জন ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগী হাসপাতালে ভর্তির তথ্য পাওয়া গেছে। এরমধ্যে সন্দ্বীপ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে রয়েছেন সাতজন।হাসপাতালের সাথে যোগাযোগ রেখে কয়েকজন রোগী বাড়িতে চিকিৎসা নিচ্ছেন।শারীরিক অবস্থা বিবেচনা করে কয়েকজনকে চট্টগ্রাম পাঠানো হয়েছে বলে জানিয়েছেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।বেসরকারি দুটি হাসপাতালের মধ্যে স্বর্ণদ্বীপ ফাউন্ডেশন হাসপাতালে এপর্যন্ত বিশজন রোগী ভর্তি হয়েছিলেন।এদের দুইজনকে চট্টগ্রাম পাঠানো হয়েছে।বর্তমানে হাসপাতালে ভর্তি আছেন চারজন।সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন চৌদ্দ জন রোগী।সন্দ্বীপ মেডিক্যাল সেন্টারে ভর্তি আছেন একজন।

গাছুয়া সরকারি হাসপাতালের চিকিৎসক ডা.আবদুল্লাহ আল মাহমুদ জানান,আমাদের হাসপাতালের বহিঃবিভাগে প্রতিদিন বিভিন্ন রোগের জন্য গড়ে একশো থেকে দেড়’শ রোগী সেবা নেয়।এদেরমধ্যে দু’একজন ডেঙ্গু প্রজেটিভ পাওয়া যায়।রোগীর শারীরিক অবস্থা ভালো দেখলে তাদের বাড়িতে রেখে বা হাসপাতালে ভর্তি করে প্রাথমিক চিকিৎসা সেবা দিই।শারিরীক অবস্থা দুর্বল দেখলে তাদের চট্টগ্রাম পাঠিয়ে দিচ্ছি।

দ্বীপের বিভিন্ন এলাকার পল্লী চিকিৎসক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারের সাথে যোগাযোগ করে জানাযায়,দ্বীপের প্রায় প্রতিটি এলাকায় ১০ থেকে ১৫ জন মানুষ ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগী রয়েছে।কোন কোন এলাকায় এর সংখ্যা ২০ এর বেশি।এদের বেশিরভাগ ঘরে থেকে চিকিৎসা নিচ্ছে।সন্দ্বীপ উপজেলার সরকারি হাসপাতালের ল্যাবে টেকনেশিয়ান না থাকায় ডেঙ্গু পরীক্ষা সম্ভব হচ্ছেনা।

বেসরকারি বিভিন্ন ডায়াগনস্টিক সেন্টারের টেকনেশিয়ানদের সাথে কথা বলে জানাযায়,সন্দ্বীপে প্রতিদিন প্রায় একশ রোগী ডেঙ্গু পরীক্ষা করছে।এদের মধ্যে গড়ে ১৫ থেকে ২০ জনের ডেঙ্গু সনাক্ত হচ্ছে।

সন্দ্বীপ মেডিক্যাল সেন্টারের টেকনোলজিস্ট জহির উদ্দিন বাবর বলেন,আমাদের এখানে প্রতিদিন ১৫ থেকে ২০ জন রোগী ডেঙ্গু পরীক্ষা করে।এরমধ্যে ৪ থেকে ৫ জনের শরীরে ডেঙ্গু আক্রান্ত সনাক্ত হচ্ছে।তবে বেশীরভাগ জ্বরের রোগী ডেঙ্গুর লক্ষন নিয়ে অসুস্থ হচ্ছে।অসুস্থ হওয়ার কয়েকদিন পর পরীক্ষা করলে তখন ডেঙ্গু সনাক্ত হয়না।

সন্দ্বীপ উপজেলার সরকারি হাসপাতালে ডেঙ্গু রোগীর পরিপূর্ণ চিকিৎসা না থাকায় চরম ভোগান্তি ও আতঙ্কে আছে উপজেলার প্রায় চার লাখ মানুষ।পাশাপাশি হাসপাতালের ল্যাব টেকনেশিয়ান না থাকায় কোন প্যাথলজি পরীক্ষা করা সম্ভব হচ্ছেনা।

সন্দ্বীপ উপজেলা প্রেসক্লাবের সভাপতি রহিম উল্ল্যা বলেন,সন্দ্বীপের মতো নদী বিচ্ছিন্ন একটি দ্বীপে সরকারি হাসপাতালে ডেঙ্গুর পরিক্ষা ও চিকিৎসা না থাকা অত্যন্ত দুখঃ জনক।স্বাস্থ্য বিভাগ সন্দ্বীপের ভৌগোলিক অবস্থানের বিষয়টি মাথায় রেখে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া উচিত।

উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা.মানস বিশ্বাস বলেন,আমাদের কাছে ডেঙ্গু পরীক্ষার কিট রয়েছে কিন্তু টেকনেশিয়ান না থাকায় পরীক্ষা করতে পারছিনা।আক্রান্তদের শুধু প্রাথমিক চিকিৎসা দিচ্ছি।তবে ডেঙ্গুর বিষয়ে সচেতনতা তৈরি করতে হাটবাজার,মসজিদ,শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ব্যপক প্রচার প্রচারণা করছি।

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published.

error: Content is protected !!