সন্দ্বীপে শ্রেণীকক্ষ সংকটে পাঠদান ব্যাহত হচ্ছে কালাপানিয়া জগৎ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে

কাজ ফেলে ঠিকাদার উধাও।

0 ৮৭৫,৪৬৯

সন্দ্বীপে শ্রেণীকক্ষ সংকটে পাঠদান ব্যাহত হচ্ছে কালাপানিয়া জগৎ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে,কাজ ফেলে ঠিকাদার উধাও হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।সন্দ্বীপ উপজেলার কালাপানিয়া জগৎ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়।আঙিনায় প্রবেশ করতেই মনে হবে গোয়াল ঘর ও আরেকটু সামনে এগিয়ে গেলে মনে হয় কুঁড়েঘর।দীর্ঘদিন ধরে অবহেলিত সরকারি এই স্কুলটি ২০২১ সালে চতুর্থ প্রাথমিক শিক্ষা উন্নয়ন প্রকল্পের অধীনে প্রায় ৪ কোটি ৪২ লাখ ৩ হাজার টাকা বরাদ্দে এমডিএসপির অধিনে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স ওয়াহেদ কনেকট্রাকশনকে বিদ্যালয় ভবন নির্মাণের কাজ দেয়া হয়।চট্টগ্রাম-৩(আসন)এর এমপি মাহফুজুর রহমান মিতা ৩১শে ডিসেম্বর ২০২১ইং এ স্কুল ও কাম সাইক্লোন সেন্টার কাজের ভিত্তি প্রস্হর স্হাপন করেন।

প্রকল্প বাস্তবায়নের সময়সীমা ২০২১ সালের ডিসেম্বর থেকে ২০২৩ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে সময় বেঁধে দেয়া হলেও এখনো ভবনের ৫ শতাংশ কাজও হয়নি।ফলে পাঠদান নিয়ে দেখা দিয়েছে অনিশ্চয়তা।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়,বিদ্যালয়ের ভবন নির্মাণের জন্য বালি এনে মাঠ ভরাট করলেও আর কোন কাজ করতে দেখা যায়নি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে।প্রকল্প বাস্তবায়নের সময় বাকি আছে আর মাত্র ৫ মাস এখনো কাজ হয়নি ৫% ও।পুরোনো স্কুলের টিনশিট বেড়া দিয়ে দায়সারা একটি কক্ষ নির্মাণ করা হয়েছে যার চাল ফুটো,নেই কোনো দরজা-জানালা।শুধু নামেই ‘সরকারি’ বিদ্যালয়।নড়বড়ে টিনশেডে চলে পাঠদান।শ্রেণীকক্ষ সংকটের কারণে শিক্ষার্থীরা বেঞ্চে বসে গাদাগাদি করে।

জানা যায়,কালাপানিয়া জগৎ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে বর্তমানে ৫ জন শিক্ষক ও ১৪১ জন শিক্ষার্থী অধ্যায়নরত।তিন কক্ষবিশিষ্ট টিনশেডে একটি লাইব্রেরি শিক্ষক অফিস এবং বাকি তিনটি শ্রেণীকক্ষ। তাতে দুই শিফটে ছাত্র-ছাত্রীদের পাঠদান করানো হয়। তবে শ্রেণীকক্ষ সংকটের কারণে পাঠদান কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে।তাছাড়া বর্ষা মৌসুমে বৃষ্টি হলেই ওই টিনশেড কক্ষগুলোর মেঝেতে পানি গড়িয়ে পড়ে। আবার বাতাসে নড়বড় করে।তাছাড়া লাগাতার বৃষ্টি হলে বিদ্যালয়ের চারপাশ পানিতে তলিয়ে যায়।

বিদ্যালয়ের পঞ্চম শ্রেণীর এক ছাত্রী বলেন,টিনের ভাঙা রুমে ক্লাস করি,বেঞ্চে বসতে হয় ঠাসাঠাসি করে।বৃষ্টি আসলেই পানি পড়ে।স্কুলের অফিস কক্ষে দেখা যাই শিক্ষকেরা কোন রকম গাদাগাদি করে বসে বসলে চেয়ারের জন্য প্রয়েজনীয আলমারি খোলা যাচ্ছে না, জায়গা সংকটের কারনে ফটোকপি মেশিন নাড়া চারা করতে করতে নষ্ট হওয়ার উপক্রম।তাছাড়া জাতীয় সংসদ নির্বাচন,উপজেলা পরিষদের নির্বাচন ও ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচনের এটি ভোট কেন্দ্র হিসাবে ব্যবহৃত তখন ও দেখা যায় মানুষ গাদাগাদি করে দাড়াতে হচ্ছে প্রিসাইডিং অফিসার বসার কক্ষ থাকেনা,অনন্য কর্মকর্তারা ভোট গ্রহন করতে কষ্ট হচ্ছে।

বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা জানিয়েছেন,১৯৬২ সালে বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠিত হয়।৬০ বছর পাড় জলে ও একটি ভবন পায়নি বিদ্যালয়টি।ভবন সংকটের কারণে আমরা শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা বসতে কষ্ট হচ্ছে।

কালাপানিয়া জগৎ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আলমগীরের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন,আমরা অনিশ্চয়তায় দিনপার করছি।ক্লাস করানোর জন্য কোনো কক্ষ নেই।বারবার তাগাদা দেয়ার পরেও কেউ কিছু করছে না।স্কুল সভাপতি ও আমরা শিক্ষকেরা মাননীয় সাংসদ সদস্য ও শিক্ষা অধিদপ্তরেরকে বার বার বিষয়টি জানিয়েছি।এরপরেও আমরা এখন লিখিত চিঠি দেব।

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published.

error: Content is protected !!