সন্দ্বীপে ১০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালে তিনদিন ধরে তালাবদ্ধ।

0 ৮৭৫,৪৭২

চট্টগ্রামের সন্দ্বীপ পৌরসভার ৩নং ওয়ার্ডে অবস্থিত সন্দ্বীপের সবচাইতে পুরাতন সরকারী ১০শয্যা বিশিষ্ট হসপাতাল কিন্তু নামে ১০ শর্যা বিশিষ্ট হাসপাতাল হলেও প্রকৃত পক্ষে কোন বেড নেই এই হাসপাতালে।বার বার নদী ভাঙ্গন ও কর্তৃপক্ষের অবহেলার কারনে নানা অব্যবস্থাপনা,চিকিৎসক ও কর্মচারী সংকট ও বেড বিহীন নাম মাত্র আউটডোর সেবা দিয়ে চলছে দীর্ঘ দুই যুগ ধরে।

নতুন জায়গায় স্থানান্তরের পর স্বাস্থ্য বিভাগ এ ব্যাপারে এখনো পর্যন্ত চরম উদাসীনতার পরিচয় দিয়ে আসছে। বিভিন্ন সময়ে সাবেক স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডাঃ ফজলুল করিম জনগন ও স্থানীয় মেয়র মোক্তাদের মাওলা সেলিমের অনুরোধে একবার এই হাসপাতালটিকে কোয়ারেন্টাইন বেড চালু করেন আবার এটিকে উপ স্বাস্থ্য কেন্দ্রে রুপদানের ঘোষনা দিয়ে আসলেও বাস্তবে নেননি কোন পদক্ষেপ।

বার বার মিথ্যে আশ্বাস দিয়েছেন।যার ফলে হাসপাতালটির সেবা পাচ্ছেনা স্থানীয় জনগন।আর তাই সাধারণ জনগণকে প্রাইভেট হাসপাতালে গিয়ে মোটা অংকের টাকা খরচ করতে হচ্ছে চিকিৎসা সেবা নিতে।তাও আবার অন্য হাসপাতালে যেতে শুধু যাতায়াত খরচ দিতে হয় কমপক্ষে তিনশ টাকা।এখন এলাকার জনগন নাম মাত্র আউটডোর সেবা পাচ্ছেন মাত্র ২ ঘন্টা।দুই যুগেও কোন পরিবর্তন হয়নি এই হাসপাতালের সেবার মানের।এভাবে বার বার জনগনকে ধোকা দেওয়া হয়েছে এমন বক্তব্য এলাকার জনগণের।

সরেজমিনে গিয়ে রোগীদের কাছে জানতে চাইলে অনেকে ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন,এটির আউটডোর সেবাও নামে মাত্র।২ জন ডাক্তার সপ্তাহে তিনদিন করে পালাক্রমে ১১টা থেকে ১ টা পর্যন্ত মাত্র ২ ঘন্টা রোগী দেখে চলে যায়,অনেক সময় অনুপস্থিত থাকেন।তারা হলেন ডাঃ হিমান্দ্রি শংকর দেবনাথ ও ডাঃ আশিফুর রহমান খান।তাও একজন আসেন চট্টগ্রাম থেকে,এবং রোগী দেখেই চট্টগ্রামে পাড়ি জমান চট্টগ্রামে।তাই বলবো এটিকে অনেকটা ইচ্ছাকৃত পরিত্যক্ত হাসপাতালে রুপ দেওয়ার প্রচেষ্টা হচ্ছে।তার জন্য স্বাস্থ্য বিভাগের অবহেলায় দায়ী।তাই এটি পুনঃনির্মান ও সক্রিয় করন এখন সময়ের দাবী।দ্রুত এটি বাস্তবায়ন হউক।

অন্য এক রোগি নুরজাহান আক্তার বলেন,এখানে এলে শুধু ডাক্তার এর প্রেসক্রিপশন মেলে।কাউকে আবার প্রাথমিক চিকিৎসার কিছু কমন ঔষধ দেওয়া হয়।দামী এন্টিবায়োটিক ও প্রায় ৩০ প্রকার ঔষধ থাকার খবর জানা থাকলেও ৫/৬ আইটেমের বেশী ঔষধ থাকে, বাকি গুলো কোথায় গায়েব হয় জানিনা।

অনেকের অভিযোগ কিছু সরকারী দামী ঔষধ ও এন্টিবায়োটিক সন্দ্বীপের বিভিন্ন ইউনিয়নের ফার্মেসীতে কিনতে পাওয়া যায় যদিও যেগুলো বিক্রয়ের জন্য নয়।এবং স্বল্প শিক্ষিত বা অশিক্ষিত লোকদের নিকট সেগুলো বিক্রি করে বলে তা প্রচারে আসেনা ও প্রতিবাদ হয়না।অন্যদিকে বাকী কর্মচারী রয়েছে মাত্র ২জন।হাসপাতালের টয়লেট ও বাকি রুমগুলো এবং উঠা নামার সিঁড়ির নিচটাও একেবারে নোংরা,অপরিচ্ছন্ন,অস্বাস্থ্যকর।মনে হয় এটি পরিত্যক্ত এলাকা।

গত দেড়মাস আগে ডাক্তারদের মাত্র ২ ঘন্টা ডিউটি পালন করা ও বেশীর ভাগ সময় অনুপস্থিত থাকার সংবাদ পত্রিকায় প্রকাশিত হওয়ার পরদিন থেকে কিছুটা পরিবর্তন হয়।১১টার পরিবর্তে ১০ টায় আসতে থাকেন তারা।কিন্তু সেই নিউজের রেশ কাটতে না কাটতে আবার একই অবস্থা।

গত দুইদিন ধরে ২৬ ও ২৭ জুলাই বুধবার ও বৃহঃস্পতিবার সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়,কোন ডাক্তার দুরে থাক হাসপাতালে কোন স্টাপও নেই।পুরো হাসপাতালে তালা ঝুলানো।ফাঁকা পেয়ে হাসপাতালের সিঁড়িতে এলাকার তরুনরা অলস সময় কাটানো বা বিশ্রাম নিচ্ছে।অন্যদিকে নারী-পুরুষসহ রোগীরা অনেক দূর থেকে এসে ফিরে যাচ্ছেন।আবার শুক্রবার বন্ধ থাকে তাহলে ৭ দিনে ডাক্তাররা তিনদিন অনুপস্থিত। আগত কয়েকজন রোগী বেলাল,আক্তার হোসেনের প্রশ্ন,এভাবে একটা হাসপাতালের কোন দায়বদ্ধতা ও জবাবদিহিতা ছাড়া কিভাবে চলে।আমাদের মতো দরিদ্র রোগীদের কি উপায় হবে।স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হস্তক্ষেপ কামনা করেন তারা।

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published.

error: Content is protected !!