১ লাখ ৩০ হাজার টাকায় জাতীয় পরিচয়পত্র পাচ্ছেন রোহিঙ্গারা।

0 ৩৮৭,৭০২

টাকার বিনিময়ে নাগরিকত্ব পাচ্ছেন মিয়ানমার থেকে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গারা।এমনকি পেয়ে যাচ্ছেন জাতীয় পরিচয়পত্র(এনআইডি)।প্রতিটি এনআইডির জন্য তাদের দিতে হচ্ছে এক লাখ ৩০ হাজার টাকা। এমন চাঞ্চল্যকর তথ্য জানিয়েছেন চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের উপ-কমিশনার(ডিসি)মোহাম্মদ আলী হোসেন।এনআইডি জালজালিয়াতির সঙ্গে জড়িত চক্রের ১০ সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

বুধবার(২৭ অক্টোবর)দুপুরে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের(সিএমপি)মহানগর গোয়েন্দা(পশ্চিম ও বন্দর)বিভাগের কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে এই তথ্য জানান উপ-পুলিশ কমিশনার(ডিসি)মুহাম্মদ আলী হোসেন।

গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন কামাল হোসেন(৪৫),পারভীন আক্তার(২৫),নুরুল আবছার(২৮),শামসুর রহমান(৬০),ইয়াছিন আরাফাত(২২),নির্বাচন কমিশনের চুক্তিবদ্ধ ডাটা এন্ট্রি অপরাটের নুর নবী(২৫),মিজানুর রহমান(২৩),ফরহাদুল ইসলাম(২৮),ইমন দাশ(২০) ও কামাল(৪২)।

এই ১০জনের মধ্যে কামাল হোসেন ও পারভীন আক্তার রোহিঙ্গা।কামাল হোসেন রোহিঙ্গা ক্যাম্পে একটি বেসরকারি এনজিওতে কর্মরত ছিলেন।পারভীন আক্তার দীর্ঘ ১৫ বছর যাবত বাংলাদেশে অবস্থান করছেন।তার স্বামী বাংলাদেশি।শামসুর রহমান কক্সবাজারের পোকখালী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সাবেক প্রধান শিক্ষক।তার বিরুদ্ধে এনআইডি কার্ড জালিয়াতির দুইটি মামলা রয়েছে।

উপ-পুলিশ কমিশনার(ডিসি)মুহাম্মদ আলী হোসেন জানান,হালিশহর হাউজিং এস্টেট উচ্চ বিদ্যালয়ে ভোটার তালিকা হালনাগাদ কার্যক্রম চলছিল।সেখানে রোহিঙ্গা ভোটার হচ্ছে এমন গোপন সংবাদের ভিত্তিতে মঙ্গলবার অভিযান চালিয়ে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সাবেক প্রধান শিক্ষক,দুইজন রোহিঙ্গা ও পাঁচজন ডাটা এন্ট্রি অপারেটরসহ ১০ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।এ সময় তাদের কাছ থেকে নির্বাচন কমিশনের সরবরাহ করা এনআইডি কার্ড তৈরির ফরম-২ এবং জন্মনিবন্ধন ফরম ৬টি উদ্ধার করা হয়েছে।

তিনি আরো জানান,গ্রেপ্তার নুরুল আবছার,শামসু মাস্টার বিভিন্ন রোহিঙ্গা ক্যাম্প থেকে রোহিঙ্গাদের সংগ্রহ করে এনআইডি কার্ড তৈরি করে দিতে লাখ টাকায় চুক্তি করতো।ভোটার করার জন্য রোহিঙ্গাদের জন্মনিবন্ধন তৈরি করে দিতেন।এই কাজে ৯ হাজার টাকার বিনিময়ে সহায়তা করতো নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ ৫ ডাটা এন্ট্রি অপারেটের।গ্রেপ্তারকৃত শামসুর রহমান মাস্টার রোহিঙ্গাদের এনআইডি কার্ড তৈরির কাজে সম্পৃক্ততা পাওয়ায় চাকরিচ্যুত হন। গ্রেপ্তারকৃত ১০ জনের বিরুদ্ধে নগরের হালিশহর থানায় দুইটি মামলা হয়েছে।

গোয়েন্দা পুলিশের উপ-কমিশনার(ডিসি)মোহাম্মদ আলী হোসেন বলেন,রোহিঙ্গাদের এনআইডি পাইয়ে দিতে এক লাখ ৩০ হাজার টাকা করে নেওয়া হয়। রোহিঙ্গাদের কাছ থেকে এ টাকা নেয় মাসুম মাস্টার। পরে দালাল নুরুল আবছারকে টাকা দিয়ে ইসির ডাটা এন্ট্রি অপারেটরদের মাধ্যমে রোহিঙ্গাদের এনআইডি পাইয়ে দিতে সহায়তা করা হয়।

তিনি আরও জানান,এই চক্রে আর কেউ জড়িত আছেন কিনা তা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।এর সঙ্গে যারাই যুক্ত থাকবে তাদেরকেই আইনের আওতায় আনা হবে বলে জানান তিনি।

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published.

error: Content is protected !!