মণিরামপুরে শহীদ মিনারে জুতা পায়ে এক ঝাঁক শিক্ষক

0 ১৬৭

মণিরামপুর(যশোর)প্রতিনিধিঃ যশোরের মণিরামপুরে একটি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের বিরুদ্ধে শহীদ মিনার অবমাননার অভিযোগ উঠেছে। বৃহস্পতিবার (৯ ডিসেম্বর) সকালে উপজেলার খাটুরা মধুপুর কায়েমকোলা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা জুতা পায়ে শহীদ মিনারে অবস্থান করেছেন। বিজয়ের মাসে শহীদ মিনারকে অবমাননা করে মূলত তারা শহীদদের অবমাননা করেছেন বলে অভিযোগ।

বৃহস্পতিবার দুপুর থেকে জুতা নিয়ে শহীদ মিনারে শিক্ষকদের অবস্থান সংক্রান্ত দুটো ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ভাসছে। রাশেদ আলী নামের একটি একাউন্ট থেকে ছবিগুলো ছাড়া হয়েছে। এরপর থেকে সমালোচনা শুরু হয়। শিক্ষকদের এমন কাণ্ডজ্ঞানহীন কাজের বিচার চেয়েছেন অনেকে।
তবে স্কুল প্রধানের দাবি, এটি ‘স্টেজ কাম শহীদ মিনার’। প্রতি অনুষ্ঠানে তারা শহীদ মিনারটিকে স্টেজ হিসেবে ব্যবহার করেন। ১৫ বছর ধরে এভাবে তারা এ কাজ করে আসছেন। আবার শহীদ দিবসে এখানে শ্রদ্ধা জানিয়ে ফুল দেন।
জানা গেছে, সারাদেশের সাথে একযোগে বৃহস্পতিবার খাটুরা মধুপুর কায়েমকোলা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের বার্ষিক পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশিত হয়। একই সাথে দুর্নীতি বিরোধ দিবস পালন করা হয়। এ উপলক্ষে বিদ্যালয়ের শিক্ষক ও পরিচালনা পরিষদের সদস্যরা জুতা পায়ে প্রতিষ্ঠানের শহীদ মিনারে ওঠেন। সামনে মাঠে অবস্থান নেয় শিক্ষার্থীরা। জুতা পায়ে শহীদ মিনারে দাঁড়িয়ে আলোচনা সভা ও ফলাফল ঘোষণা করেন শিক্ষকরা। এসময় অন্তত ১৫ জনকে জুতা পায়ে শহীদ মিনারে অবস্থান করতে দেখা গেছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে খাটুরা মধুপুর কায়েমকোলা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক একেএম বজলুর রশিদ বলেন, এটি ‘স্টেজ কাম শহীদ মিনার’। প্রতি অনুষ্ঠানে আমরা এটাকে স্টেজ হিসেবে ব্যবহার করি। আবার শহীদ দিবসে এখানে শ্রদ্ধা জানিয়ে ফুল দিই। অনেক শিক্ষার্থীকে একটি কক্ষে জায়গা দিতে না পারায় শহীদ মিনারে অনুষ্ঠান করেছি। জুতা পায়ে শহীদ মিনারে ওঠাকে আমি প্রতিবন্ধক কিছু মনে করি না।
হরিহরনগর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি ইউপি চেয়ারম্যান জহিরুল ইসলাম বলেন, খাটুরা মধুপুর কায়েমকোলা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক একেএম বজলুর রশিদ আওয়ামী লীগের রাজনীতির সাথে জড়িত। তিনি হরিহরনগর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সদস্য।
এ জনপ্রতিনিধি বলেন, এ অঞ্চলের শহীদ মিনারগুলোকে ‘স্টেজ কাম শহীদ মিনার’ হিসেবে ব্যবহার করা হয়। শহীদ মিনারে কোন অনুষ্ঠান করা হলে স্তম্ভগুলো কাপড় দিয়ে ঢেকে রাখা হয়।
তবে খাটুরা মধুপুর কায়েমকোলা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ক্ষেত্রে চেয়ারম্যানের কথার সাথে মিল পাওয়া যায়নি। বৃহস্পতিবার শিক্ষকরা শহীদ মিনারে জুতা নিয়ে অবস্থান করার সময় স্তম্ভগুলো উন্মুক্ত ছিলো।
মণিরামপুর উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা বিকাশ চন্দ্র সরকার বলেন, শহীদ মিনারকে মঞ্চ হিসেবে ব্যবহারের সুযোগ নেই। শিক্ষকরা জুতা পায়ে শহীদ মিনারে উঠে ঠিক করেননি। বিষয়টি খোঁজ নিয়ে দেখা হবে।

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published.

error: Content is protected !!