আরেকটি এক-এগারোর চেষ্টা চালাচ্ছে ষড়যন্ত্রকারীরাঃ পরশ

0 ৩৮৭,৭৬৩

ষড়যন্ত্রকারীরা আরেকটি এক-এগারো আয়োজন করার চেষ্টা চালাচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন যুবলীগ চেয়ারম্যান শেখ ফজলে শামস পরশ।সোমবার(৩০ মে) দুপুরে নগরের দি কিং অব চিটাগাং-এ নগর যুবলীগের সম্মেলনে উদ্বোধক হিসেবে তিনি বক্তব্য রাখছিলেন।

 

যুবলীগের চেয়ারম্যান শেখ ফজলে শামস পরশ বলেন, ষড়যন্ত্রকারীরা চারিদিকে হতাশার বাদ্যযন্ত্র বাজাচ্ছে। আরেকটি এক-এগারো আয়োজন করার চেষ্টা চালাচ্ছে। সরকারকে ব্যর্থ প্রমাণ করতে পরিকল্পিত নীলনকশা চলছে। এমনভাবে নীলনকশা করা হচ্ছে যেন জনগণ সরকার থেকে আস্থা হারিয়ে ফেলে। দেশের সুশীল সমাজের একটি অংশ এখনো তৎপর ওয়ান ইলেভেনের কুলীলবদের মাঠে নামাতে, তারা সদা ব্যস্ত। যারা অনির্বাচিত সরকারের দালাল ছিল।

 

কিছু গণমাধ্যম এখন বিরোধী দলের ভূমিকায় নেমেছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে সরকারের গঠনমূলক সমালোচনা হবে সেটি স্বাভাবিক। কিছু গণমাধ্যম সরকারকে প্রশ্নবিদ্ধ করতে কাজ করছে। আর এসব গণমাধ্যম, আন্তর্জাতিক শত্রু, এক-এগারোর কুশীলব, যখন এক হয় তখনই একটি সরকার সঙ্কটে পড়ে। সরকারের ভেতরে থাকা কিছু ষড়যন্ত্রকারী, ক্ষমতার মধু খাওয়া মোশতাক তাদের দলে যুক্ত রয়েছে। এসব ষড়যন্ত্র বাংলাদেশের যুবসমাজ বরদাশত করবে না।

 

আগামী নির্বাচন শেখ হাসিনার অধীনেই হবে জানিয়ে পরশ আরও বলেন, শেখ হাসিনার চেয়ে কে বেশি যোগ্য? কে বেশি নিরপেক্ষ? তিনি ন্যায় নিরপেক্ষতার মূর্ত প্রতীক, সেটি তিনি তার যোগ্যতা দিয়ে প্রমাণ করেছেন।

 

যুবলীগের নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, আপনারা যদি যুবলীগ করতে চান পরিচ্ছন্ন রাজনীতি করতে হবে। শেখ হাসিনার রাজনৈতিক মানদণ্ড অনুসরণ করতে হবে। সততা, নিষ্টার সাথে রাজনীতি করতে হবে। আমাদের রাজনীতির মানদণ্ড হচ্ছে মানবিকতা, ন্যায়পরায়ণতা, স্বচ্ছতা।

 

খালেদা জিয়ার সরকার এদেশকে ৫ বার দুর্নীতিতে চ্যাম্পিয়ন করেছে। আর শেখ হাসিনা সরকার দুর্নীতি দমন কমিশনকে স্বাধীন করেছেন। বিএনপি-জামায়াত জঙ্গিবাদের উথান করেছে, শেখ হাসিনা জঙ্গিবাদ উৎখাত করেছেন। দুর্নীতি দমনে শেখ হাসিনা সরকার কঠোর নীতি গ্রহণ করেছে। দুর্নীতিবাজ যেইই হোক না কেন ছাড় দেয়া হচ্ছে না। এমপি, মন্ত্রী কাউকেই ছাড়া হচ্ছে না। – যোগ করেন পরশ।

 

পরশ আরও বলেন, ‘চট্টগ্রামের মাটি রাজনৈতিকভাবে ভীষণ উর্বর মাটি। অনিশ্চিত কারণে চট্টগ্রামে নির্বাচনে আমরা আশানুরূপ ফল পাই না। যুবলীগকে একদিকে সংগঠন গোছাতে হবে, সংগঠনকে শক্তিশালী করতে হবে। অন্যদিকে সরকারের বিরুদ্ধে সকল ষড়যন্ত্র মোকাবিলা করতে হবে। এ সমাজে কিছু মানুষ আছে মানুষকে জিম্মি করে লাভবান হতে চায়। এরা তেল থেকে শুরু করে সবকিছু মজুদ করে। পিকে হালদার এদের সবচেয়ে বড় উদাহরণ। বাংলাদেশের কিছু উন্নয়ন সহযোগী আছে যারা সরকারের ভালো চায় না।’

 

‘আমরা যদি এক-এগারোর দিকে তাকায় তাহলে দেখতে পায়, তখন এক শ্রেণির ভাড়াটে বুদ্ধিজীবী দেশ গেলো বলে হইচই তুলেছিল। সরকারের ভিতরে মোস্তাকরা ষড়যন্ত্র করেছিল। আর আন্তর্জাতিক শত্রুরা মুজিবের জনপ্রিয়তাকে ভয় পেয়েছিল। ক্ষমতার মধু খাওয়া কিছু মোস্তাক তাদের দলে ছিল। ক্ষমতার নেশায় বুদ হয়ে তারা সংবিধান, গণতন্ত্র সবকিছু ভুলে গিয়েছিল। বিচারপতি সাত্তারকে দিয়ে ক্ষমতা দখল করেছিল এরশাদ। ২০০৭ সালে অনির্বাচিত সরকার এসেছিল পরিকল্পিত একটা উদ্দেশ্য নিয়ে। ২০০১ সালে তত্ত্ববধায়ক সরকার দায়িত্ব নিয়েই আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে নেমে গেল।’ বলেন যুবলীগের চেয়ারম্যান শেখ ফজলে শামস পরশ।

 

মহানগর যুবলীগের আহ্বায়ক মহিউদ্দিন বাচ্চুর সভাপতিত্বে ও যুগ্ম আহ্বায়ক দেলোয়ার হোসেন খোকা, ফরিদ মাহমুদের সঞ্চালনায় সম্মেলনে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য শেখ ফজলুল করিম সেলিম এমপি। প্রধান বক্তা ছিলেন, যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক মাঈনুল হোসেন খান নিখিল।

 

বিশেষ অতিথি ছিলেন আওয়ামী লীগের সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ, আওয়ামী লীগের চট্টগ্রামের দায়িত্বপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদক ও সংসদের হুইপ আবু সাইদ আল মাহমুদ স্বপন, চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মাহতাবউদ্দিন চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক সিটি মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন, শিক্ষা উপমন্ত্রী ব্যারিস্টার মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল, চট্টগ্রাম-১১ (বন্দর-পতেঙ্গা) আসনের সংসদ সদস্য এম আব্দুল লতিফ, সিটি মেয়র রেজাউল করিম চৌধুরী, চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান জহিরুল আলম দোভাষ।

 

বিশেষ বক্তা ছিলেন আওয়ামী যুব লীগের যুগ্ম সম্পাদক ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নাঈম, মোহাম্মদ বদিউল আলম, ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নাঈম, সাংগঠনিক সম্পাদক, সাইফুর রহমান সোহাগ, কাজী মাজহারুল ইসলাম, কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সদস্য নিয়াজ মোর্শেদ এলিট প্রমুখ।

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published.

error: Content is protected !!