চকরিয়া উপজেলার খুটাখালী ছড়াখালের মাঝখানে বাঁধ দিয়ে প্রবাহ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। বালু পরিবহনে যান চলাচলের জন্য রাস্তা তৈরি করতে এই বাঁধ নির্মাণ করা হয়েছে।খুটাখালী-২ ও ৩ বালু মহালের ইজারাদাররা এটি করেছেন।
সরেজমিন দেখা গেছে,খুটাখালী ইউনিয়নের ছড়িবিল এলাকায় এই রাস্তা তৈরি করা হয়েছে। দুজন শ্রমিক রাস্তার ওপর বালু দিয়ে সংস্কার করছেন।পাশেই একটি টং ঘরে ইজারাদারের লোকজন বালু পরিবহনের ট্রাকগুলো দেখাশোনা করছেন।এতে ছড়াখালটির একপাশ শুকিয়ে শুষ্ক মৌসুমে খালের স্বাভাবিক প্রবাহ হারিয়ে ফেলেছে। ছড়াখালের বিভিন্ন অংশ শুকিয়ে যাওয়ায় কৃষকেরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন।বাঁধ দিয়ে রাস্তা নির্মাণের ফলে এমন পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে বলে এলাকাবাসীর অভিযোগ।
স্থানীয় কজন নারী-পুরুষ অভিযোগ করে বলেন, প্রতিবছর ইজারাদার খালের ওপর বালু ফেলে ভরাট করেন।বালুমহালের সীমানা ছাড়াও সংরক্ষিত বনাঞ্চল থেকে অবৈধভাবে বালু তুলে ইজারাদাররা তাঁদের নির্ধারিত স্থানে বালু মজুত করে।সেখান থেকে সারা দেশে বালু সরবরাহ করা হচ্ছে।স্থানীয় লোকজন অভিযোগ করার পরও ইজারাদার রাস্তা অপসারণ করেননি।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় কয়েকজন যুবক অভিযোগ করে জানান,দীর্ঘদিন ধরে ছড়াখালটির পানি তিন গ্রামের মানুষ শুষ্ক মৌসুমে ব্যবহার করছে।খালের ওপর বালু দিয়ে রাস্তা নির্মাণের ফলে খালের পানি ঘোলা হয়ে গেছে।এ কারণে পানি ব্যবহারের উপযোগীতা নষ্ট হচ্ছে।এ ছাড়া ছোটবড় ট্রাক চলাচলের কারণে ধুলাবালিতে মানুষ অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে।
বন বিভাগ বলছে,খুটাখালীর ছড়াখাল ইজারা নিলেও তাঁরা বন বিভাগের সংরক্ষিত বনাঞ্চলের ছড়িবিলের আশপাশ,গোদারফাঁড়ি,নওরফাঁড়ি, হরিণছড়ি,মধুরশিয়া এলাকায় অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করছেন।বালুমহালের ইজারাদার শর্ত ভেঙ্গে সংরক্ষিত বনের ভেতর থেকে বালু উত্তোলন করছেন।
খুটাখালী-২ বালুমহালের ইজারাদার সাইফুল ইসলাম অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন,আমি একা খালটি ইজারা নেইনি। আমার নামে খুটাখালী-২ বালুমহাল এবং খুটাখালী-৩ বালুমহাল মোহাম্মদ সাদেকের নামে ইজারা হলেও উপজেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক কাউছার উদ্দিন কছির,আওয়ামী লীগ নেতা নাছির উদ্দিন চৌধুরীসহ অনেকেরই শেয়ার রয়েছে।তবে তিনি খুটাখালী খালের ওপর বাঁধ দিয়ে রাস্তা নির্মাণের বিষয়ে বক্তব্য দিতে রাজি হননি।এ বিষয়ে জানতে চাইলে পরে কথা বলবেন বলে তিনি ফোন কেটে দেন।
ফুলছড়ি বিট কর্মকর্তা ও রেঞ্জ কর্মকর্তা(ভারপ্রাপ্ত) ফারুক আহমদ বাবুল বলেন,ইজারাদাররা সংরক্ষিত বনের ভেতর থেকে বালু নিয়ে যাচ্ছে সেটা ঠিক।এ ঘটনায় একাধিকবার অভিযান চালানো হয়েছে।বনের ভেতর থেকে বালু সংগ্রহ করার অপরাধে তাঁদের বিরুদ্ধে বেশ কয়েকটি মামলা রয়েছে।কক্সবাজার জেলা প্রশাসকের কাছে বালুমহাল ইজারা বন্ধ করার জন্য লিখিতভাবে আবেদন করা হয়েছে।
চকরিয়া ইউএনও জেপি দেওয়ান বলেন,এখানে নতুন যোগদান করেছি।খালের ওপর বাঁধ দিয়ে রাস্তা নির্মাণের বিষয়টি আমি অবগত নই।খোঁজ নিয়ে বিষয়টি খতিয়ে দেখব।