চট্টগ্রামের পাহাড়তলীতে ঘোষণা দিয়ে যুবক হত্যার ঘটনার মূল আসামী রাজীবসহ গ্রেফতার-৪।

0 ৭৮০,৯২৩

চট্টগ্রামের পাহাড়তলীতে সন্ধ্যায় ঘোষণা দিয়ে ভোররাত্রে ছুরিকাঘাত করে যুবক হত্যার ঘটনার মূল আসামী রাজীবসহ তার তিন সহযোগীকে গ্রেফতার করেছে র‌্যাব।গত ২৮ মে ২০২৩ইং তারিখ দিবাগত রাত আনুমানিক তিনটায় অজ্ঞাতনামা একব্যক্তি চট্টগ্রাম মহানগরীর নয়াবাজার এলাকার একটি কারখানার গেইটের সামনে প্রশ্রাব করলে কারখানার নৈশ প্রহড়ী ভিকটিম এর বড় ভাই মফিজ(৪০)তাকে বাধা প্রদান করে।এতে ক্ষিপ্ত হয়ে উক্ত ব্যক্তি নৈশ প্রহরী মফিজকে বলে, ‘এটা সরকারী জায়গা তুই বাধা দেওয়ার কে’ এই বলে উভয়ের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়।

একপর্যায়ে আসামী আবু তাহের রাজীব,ওসমান,আবুল হাসান এবং কতিপয় অজ্ঞাতনামা আসামীরা উক্ত জায়গায় এসে কথা কাটাকাটিতে লিপ্ত হয়।বড় ভাইয়ের সাথে কথা কাটাকাটির শব্দ শুনে ভিকটিক আজাদুর রহমান ঘটনাস্থলে গেলে তার সাথেও কথা কাটাকাটি এবং একপর্যায়ে ধাক্কাধাক্কি হয়।পরবর্তীতে আসামীরা ভিকটিমকে দেখে নিবে বলে হুমকি প্রদান করে স্থান ত্যাগ করে।

পরবর্তীতে গত ২৮ মে ২০২৩ইং তারিখ ভোর আনুমানিক সাড়ে চারটায় আজাদুর রহমান দোকান হতে নাস্তা আনার জন্য বাসা হতে বের হয়।পথিমধ্যে পাহাড়তলী থানাধীন নয়াবাজার পৌছালে পূর্ব হতে উৎপেতে থাকা আসামীরা পূর্ব পরিকল্পিতভাবে আজাদুর রহমানকে একা পেয়ে হত্যার উদ্দেশ্যে এলাপাথাড়ীভাবে পেটে,পিঠে ও শরীরের বিভিন্ন জায়গায় উপর্যুপরি ছুরিকাঘাত করে গুরুতর আহত করে পালিয়ে যায়।ছুড়িকাঘাতের ফলে তার পেটের ভুরি বের হয়ে যায়।আজাদুর রহমানের চিৎকার শুনে আশেপাশের লোকজন তাকে উদ্ধার করে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক ভিকটিমকে মৃত ঘোষণা করেন।

পরবর্তীতে উক্ত ঘটনায় আজাদুর রহমানের স্ত্রী বাদী হয়ে চট্টগ্রাম জেলার পাহাড়তলী থানায় চারজনকে আসামীসহ অজ্ঞাতনামা আরও ৩/৪ জনকে আসামী করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।মামলা দায়েরের পর হতে আসামীরা আইন শৃংখলা বাহিনীর নিকট হতে গ্রেফতার এড়াতে এলাকা ছেড়ে আত্মগোপনে চলে যায়।

উল্লেখ্য যে,হাসপাতালে নেয়ার পথে মুমূর্ষ অবস্থায় মৃত্যু পথযাত্রী আজাদুর রহমান তার ভাতিজা তারেকুর রহমানকে তার উপর আক্রমণকারীদের নাম প্রকাশ করেন।মৃত্যুর পূর্বে আরও বলে যান,পূর্ব শত্রুতার জের ধরে তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে আসামীরা তাকে হত্যার উদ্দেশ্যে এলাপাথাড়ীভাবে উপর্যুপরি ছুরিকাঘাত করেছে।

র‌্যাব-৭,চট্টগ্রাম বর্ণিত মামলার পলাতক আসামীদের গ্রেফতারের লক্ষ্যে গোয়েন্দা নজরধারী এবং ছায়াতদন্ত অব্যাহত রাখে।নজরধারীর এক পর্যায়ে র‌্যাব-৭,চট্টগ্রাম গোপন সূত্রে জানতে পারে যে,বর্ণিত মামলার অন্যতম প্রধান কয়েকজন আসামী রাঙ্গামাটি জেলার কোতয়ালী থানাধীন একটি আবাসিক হোটেলে অবস্থান করছে।

উক্ত তথ্যের ভিত্তিতে র‌্যাব-৭,চট্টগ্রামের একটি আভিযানিক দল ২৯ মে বর্ণিত স্থানে অভিযান পরিচালনা করে মামলা দায়েরের ১৫ ঘন্টার মধ্যে ৩ জন আসামিকে গ্রেফতার করেন।আসামীরা হলেন,হালিশহর থানাধীন আবুল হাশেমের ছেলে আবু তাহের রাজীব,লক্ষ্মীপুর সদর থানা আওতাধীন সংসেরাবাদের আনোয়ার হোসেনের ছেলে দেলোয়ার হোসেন জয় এবং হালিশহর থানাধীন এরশাদ চেয়ারম্যানের বাড়ির ইব্রাহিমের ছেলে রায়হান সজীব।

পরবর্তীতে গ্রেফতারকৃত আসামীদের দেয়া তথ্যমতে নগরীর কদমতলী বাসস্ট্যান্ড এলাকা হতে আসামী আবুল হাসনাত রানাকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়।হালিশহর নয়াবাজার এলাকার আবুল হাশেমের ছেলে আবুল হাসনাত রানা।পরবর্তীতে উপস্থিত সাক্ষীদের সম্মুখে আটককৃত আসামীদের জিজ্ঞাসাবাদে তারা বর্ণিত হত্যার সাথে সরাসরি সম্পৃক্ত ছিল মর্মে স্বীকার করে।গ্রেফতারকৃত আসামী সংক্রান্তে পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহনের নিমিত্তে সংশ্লিষ্ট থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published.

error: Content is protected !!