”মুরাদপুরে নিখোঁজ সালেহ আহমদের ছেলে চাকরি করবেন না আর”

0 ১৯৮

চট্টগ্রাম নগরীর মুরাদপুরে নালায় পড়ে নিখোঁজ হওয়া সালেহ আহমদের একমাত্র ছেলে সাদেকুল্লাহ মাহিনকে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনে চাকরি দিয়ে কথা রেখেছিলেন মেয়র এম রেজাউল করিম চৌধুরী।

কিন্তু চলতি মাসে দুই দিন চাকরি করার পর তিনি আর ফিরে যাননি তার কর্মস্থল ওয়াসা মোড়ের সিটি কর্পোরেশন সিএনজি ফিলিং স্টেশনে।

জানা যায়,সাদেকুল্লাহ মাহিন এবারের এইচএসসি পরীক্ষার্থী।গত অক্টোবর মাসে তাকে সিটি কর্পোরেশনের চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারীর পদে অস্থায়ী নিয়োগ দেন চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের মেয়র রেজাউল করিম চৌধুরী।

তবে এর মাসখানেক পর ওই পদে আর চাকরি করবেন না জানিয়ে চট্টগ্রাম প্রতিদিনকে মুঠোফোনে সাদেকুল্লাহ মাহিন বলেন, ‘আমাকে বলা হয়েছিল সিএনজি পাম্পে স্লিপ লেখার কাজ।কিন্তু চলতি মাসে আমি দুই দিন কাজ করেছি।আর এ দুই দিনেই আমাকে দিয়ে স্লিপ লেখা আর গাড়িতে গ্যাস ঢোকার দুটি কাজ একসাথে করানো হয়।আমার পক্ষে এ ধরনের কাজ করা সম্ভব নয়।তাই আমি আর অফিসে যাইনি।যদিও চলতি মাসেই আমার এইচএসসি ফাইনাল পরীক্ষা।’

সাদেকুল্লাহ মাহিন বলেন, ‘ওই পদে চাকরি না করার কথা আমি লিখিতভাবে সিটি কর্পোরেশনের মেয়র বরাবর দরখাস্ত দিয়ে জানাবো।আমি আশা করছিলাম কর্পোরেশনের কোনো অফিসে অফিস সহকারীর পদে চাকরি পাওয়ার।’

মাহিন বলেন, ‘আমাকে সিএনজি পাম্পে স্লিপ লেখার যে পদে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে,সেই পদে না রেখে আমাকে দিয়ে গ্যাস ভরার কাজ করিয়ে কর্তৃপক্ষ অমানবিক কাজ করেছে।আমাকে কোন নিয়োগপত্রও দেওয়া হয়নি।আমার পদপদবি বা আমার কাজ কী— তাও বলা হয়নি স্পষ্ট করে।’

তিনি বলেন, ‘বাবাকে হারিয়ে আমরা নিঃস্ব হয়ে গেছি।আমাদের দুঃসময়ে মেয়র রেজাউল করিম চৌধুরী পাশে দাঁড়ানোর পর আমি মনে করেছিলাম মা আর বোনকে নিয়ে মোটামুটি ভালো চলতে পারবো।আমি এ ব্যাপারে প্রকৌশলী সুদীপ বসাককে অনুরোধ করেছিলাম আমাকে স্লিপ লেখার কাজে নিয়োজিত রাখতে।তিনি আমাকে বলেন,এ পদে থাকলে দুটি কাজই করতে হবে।তার কিছু করার নেই।’

এ ব্যাপারে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী সুদীপ বসাক‌ জানান, সাদেকুল্লাহ মাহিন চাকরি ছেড়ে দিয়েছে কিনা তিনি জানেন না।

সুদীপ বসাক‌ বলেন,তার শিক্ষাগত যোগ্যতা অনুযায়ী তাকে চাকরি দেওয়া হয়েছে।তাকে স্লিপ লেখার কাজের পাশাপাশি কারো অনুপস্থিতিতে গাড়িতে গ্যাস ভরার দায়িত্ব পালন করতে বলা হয়। এ নিয়ে যদি সে চাকরি না করে আনঅফিসিয়ালি কাউকে না জানিয়ে অফিসে না আসে সেটা তার ব্যক্তিগত ব্যাপার।তবে এখনও পর্যন্ত আমরা তার চাকরি ছাড়ার কোনো কাগজপত্র পাইনি।তবে আমরা জানি সামনে তার এইচএসসি পরীক্ষা।

গত ২৫ আগস্ট বৃষ্টির পানির স্রোতে নগরীর মুরাদপুরে পা পিছলে নালায় পড়ে নিখোঁজ হন ব্যবসায়ী ছালেহ আহমদ।তার গ্রামের বাড়ি পটিয়া উপজেলার কুসুমপুরা ইউনিয়নের মনসা গ্রামে। নগরীর চকবাজারে তিনি সবজি বিক্রি করতেন। এদিকে নিখোঁজ হওয়ার পর ছালেহ আহমেদের নগরীর বাসায় পরিবারকে সান্ত্বনা দিতে যান সিটি মেয়র এম রেজাউল করিম।এ সময় তিনি ছালেহ আহমেদের পরিবারের একজনকে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনে চাকরি দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেন। এরপর গত ১২ অক্টোবর ছালেহ আহমেদের একমাত্র পুত্র সাদেকুল্লাহ মহিনকে চসিক পরিচালিত সিএনজি ফিলিং স্টেশনে অস্থায়ী পদে চাকরি দেওয়া হয়।

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published.

error: Content is protected !!