যশোরে চৌগাছায় পাওনা টাকা চাওয়াকে কেন্দ্র করে মৃত্যুর ঘটনায় মামলা।

0 ১৮৪

হাফিজুর শেখঃ যশোরের চৌগাছায় পাওনা টাকা চাওয়াকে কেন্দ্র করে গোলযোগে শওকত আলী খান(৫০)মৃতের ঘটনায় মামলা হয়েছে।শনিবার (২০ নভেম্বর) নিহতের বড় ছেলে জুয়েল রানা চৌগাছা থানায় ৩০২ ধারায় মামলা করেন। যার নম্বর-১০।

মামলার দুই আসামি পুলিশ হেফাজতে থাকা গ্রামের নারী ইউপি সদস্য প্রার্থী পলি পারভীন (৪০) ও তার ছেলে ইমরান হোসেনকে (২২) গ্রেফতার দেখিয়ে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে।এদিকে রবিবার (২১ নভেম্বর) বিকাল সাড়ে ৪টায় এ রিপোর্ট লেখার সময় শওকত আলীর মরদেহ ময়নাতদন্ত শেষে গ্রামে নিয়ে দাফনের প্রস্তুতি চলছিলো।

শনিবার (২০ নভেম্বর) বেলা সাড়ে ১১টার দিকে উপজেলার হাকিমপুর ইউনিয়নের হাজীপুর গ্রামের নারী ইউপি সদস্য প্রার্থী পলি পারভীনের সাথে কথাকাটাকাটির সময়ে কিলঘুষিতে পড়ে গিয়ে আগে থেকেই হৃদরোগে অসুস্থ শওকত আলী মারা যান বলে পরিবারের অভিযোগ।১৯০০ টাকা ও ৭ কেজি চালের জন্য শওকত আলীর প্রাণটাই গেলো!

লিখিত এজহারে নিহতের ছেলে বলেন, দীর্ঘদিন ধরে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে পলি ও ইমরানের সাথে আমাদের বিরোধ চলছিলো। আমার চাচী শাহিদা বেগমের নিকট পলি পারভীনের এক হাজার ৯০০ টাকা ও সাত কেজি চাল পাওনা এবং পূর্ব শত্রুতাকে কেন্দ্র করে আমার বাবা শওকত আলী খানের প্রতি আক্রোশ পোষণ করে আসছিলো। এর জেরে শনিবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে গ্রামের সেলিমের বাড়িতে আমার বাবা বিল্ডিং নির্মাণ শ্রমিকের কাজ করার সময়ে তাকে উস্কানিমূলক কথাবার্তা, অশ্লীল গালিগালাজ ও মারপিট করতে উদ্ধত হয় এবং ভয়ভীতি-হুমকি প্রদান করে। আমার বাবা তাদের অশ্লীল গালাগালি ও হুমকিতে ভীত হয়ে কাজ বন্ধ করে বাড়ি চলে যায়। বেলা ১২টার দিকে সেলিমের বাড়ির সামনে সোলিং রাস্তার উপর পৌঁছালে আসামিদ্বয় (পলি ও তার ছেলে ইমরান) আমার বাবাকে আবারো গালাগালিসহ কিলঘুষি মারে। তখন তিনি অসুস্থ হয়ে রাস্তায় পড়ে অজ্ঞান হয়ে যান। সংবাদ পেয়ে আমিসহ আমার ভাই, চাচা ও পার্শ্ববর্তী লোকজন ঘটনাস্থলে গিয়ে স্থানীয়দের সহায়তায় তাকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিলে কর্তব্যরত চিকিৎসক বেলা ১২টা ৪০ মিনিটে তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

লিখিত অভিযোগে তিনি আরো বলেন, আমর বাবা হৃদরোগী জানা সত্বেও আসামিদ্বয় ইচ্ছাকৃতভাবে তাকে গালাগালি ও হুমকি প্রদানসহ কিলঘুষি মারলে আমার পিতার মৃত্যু হয়।চৌগাছা থানার ওসি সাইফুল ইসলাম সবুজ বলেন, এঘটনায় নিহতের ছেলে জুয়েল রানা ৩০২ ধারায় মামলা করেছেন। সে মামলায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য হেফাজতে নেয়া পলি পারভীন ও তার ছেলে ইমরানকে গ্রেফতার দেখিয়ে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

প্রসঙ্গত নিহতের বড়ভাবি শাহিদা বেগম ও পলি পারভীন দুজনেই নারী ইউপি সদস্য প্রার্থী ছিলেন। পলি শাহিদার কাছে পূর্বে নেয়া এক হাজার ৯০০ টাকা ও সাত কেজি চাল পেতেন। সেই টাকা চাওয়া কেন্দ্র করে কথাকাটাকাটি ও গোলযোগে শওকতের মৃত্যু হয়। এটাকে স্থানীয় কেউ কেউ নির্বাচনী সহিংসতা বললেও নিহতের বড় ছেলে মুঠোফোনে জানিয়েছিলেন, তার চাচি সাদিয়া খাতুন ও পলি পারভীন দুজনেই ইউপি সদস্য প্রার্থী হয়ে পরাজিত হন।

সাদিয়ার কাছে পলির এক হাজার ৯০০ টাকা ও সাত কেজি চাল পাওনা ছিলো। সেই টাকা ও চাল চাওয়া কেন্দ্র করে ঘটনা ঘটলেও এটা নির্বাচনি সহিংসতা নয়। এমনকি লিখিত এজহারের কোথাও তিনি পলি ও সাদিয়ার নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ার বিষয়টিও উল্লেখ করেননি।

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published.

error: Content is protected !!