র‌্যাব-৭ এর অভিযানে বোতলভর্তি জ্বীনসহ তান্ত্রিকবেশি প্রতারক আটক।

কখনো মানবাধিকার কর্মী,সাংবাদিক,কখনো তান্ত্রিক পরিচয়ে স্বর্নমুদ্রা,স্বর্নের ঘটি-বাটিসহ বিভিন্ন জিনিস দেখিয়ে প্রতারণার মাধ্যমে হাতিয়ে নেয় লাখ লাখ টাকা।

0 ২০০,৩৫০

বোতলভর্তি জ্বীনসহ তান্ত্রিকবেশি প্রতারক কে আটক করেছে র‌্যাব-৭,চট্টগ্রাম।কখনো মানবাধিকার কর্মী,সাংবাদিক,কখনো তান্ত্রিক পরিচয়ে স্বর্নমুদ্রা,স্বর্নের ঘটি-বাটিসহ বিভিন্ন জিনিস দেখিয়ে প্রতারণার মাধ্যমে হাতিয়ে নেয় লাখ লাখ টাকা।

 

ফারহাদুল ইসলাম(১৯)দীর্ঘ দুই বছর যাবৎ মানসিক বিকারগ্রস্থ থাকায় তার পরিবার বিভিন্ন জায়গাতে চিকিৎসা করা কালে প্রতিবেশীদের সহিত বিষয়টি আলোচনা করিলে কোন এক জনৈক প্রতিবেশী তাকে জানান যে,ইব্রাহিম কবিরাজ নামের তার এক পরিচিত লোক আছে।তাহার সহিত যোগাযোগ করিলে হয়ত তোমার উপকার হওয়ার সম্ভবনা আছে।

 

তাহার কথা বিশ্বাস করিয়া উক্ত কবিরাজ ইব্রাহিম এর সাথে দেখা করিলে তিনি জানান এ বিষয়ে কবিরাজী চিকিৎসা আছে।পরবর্তীতে কবিরাজ ইব্রাহিম(৪২)ফরহাদকে তার বাসায় আসতে বলে। তাকে কিছু তাবিজ ও পানি পড়া দেয় এবং বলে যে, ভাগ্যে বহু মূল্যবান গুপ্তধন রয়েছে।

 

কবিরাজ ইব্রাহিম তা উদ্ধার করে দিতে পারবেন তার জন্য কিছু টাকা খরচ করতে হবে।উক্ত গুপ্তধন উদ্ধারের জন্য কিছু সরঞ্জামাদী ক্রয় করতে হবে।ফরহাদ ও তার পরিবার সরল মনে কবিরাজ ইব্রাহিম এর কথা বিশ্বাস করে নগদ ২,০০,০০০/-টাকা প্রধান করে।প্রতারক কবিরাজ ইব্রাহিম ফরহাদের কাছ থেকে ২,০০,০০০/-(দুই লক্ষ্য)টাকা নিয়ে তার কতিত আসনের চার পাশে রাখে এবং কিছুক্ষন পর জানায় যে,গুপ্তধন কোথায় আছে তা জানার সাথে সাথে ভিকটিমের পরিবারকে সাথে নিয়ে উদ্ধার করে বুঝিয়ে দিব।

 

তারপর হতে কবিরাজ ইব্রাহিম গুপ্তধন উদ্ধারের জন্য কালক্ষেপন করতে তাকে।কিছুদিন পর প্রতারক কবিরাজ জানায় যে,গুপ্তধন উদ্ধারে আরো টাকা খরচ হবে।কিছু দিন পর ভিকটিম ও তার মা কবিরাজ ইব্রাহিম এর বাসায় ১,৫০,০০০/- হাজার টাকা নিয়ে হাজির হলে কবিরাজ আসন করে জানায় গুপ্তধন পাওয়া গিয়াছে তখন কবিরাজ ভিকটিম ও তার পরিবারের লোকজন নিয়ে ভিকটিমের বাড়ীর পাশে একটি খোলা মাঠ হতে মাঠি খনন করে ০১টি ছোট তালা,০১টি ছোট পুতুলের ন্যায় মূর্তি এবং ০৩টি পিতলের ঘটি বাহির করে এবং বলে গুপ্তধন পাওয়া গিয়াছে,ধৈর্য ধারন করেন আরো অনেক মূল্যবান গুপ্তধন পাবেন।

 

প্রতারক কবিরাজ ইব্রাহিম বলে আবারও ১,৫০,০০০/- নিয়ে আসেন ২/৩ দিনের মধ্যে আসন বসিয়ে আরো গুপ্তধন বাহির করে দেব।তার কথা মতো টাকা নিয়ে হাজির হলে গুপ্তধন উদ্ধারে কালক্ষেপন করে কবিরাজ ইব্রাহিম এরুপ প্রতারনা করে ফরহাদ ও তার পরিবাবের কাছ থেকে মোট ৫,৯০,০০০/- টাকা হাতিয়ে নেয়।

গত ১৯ই এপ্রিল ২০২২ ইং তারিখ ৩টায় ফরহাদ ও তার পরিবার কবিরাজের বাসায় গিয়ে তাদের নিকট হতে প্রতারনা মূলক ভাবে হাতিয়ে নেওয়া ৫,৯০,০০০/-( পাঁচ লক্ষ নব্বই হাজার)টাকা ফেরৎ চাহিলে কবিরাজ তাদের বেধে রাখার জন্য লোকজন ডাকে এবং তাদের আধ্যাত্বিক ক্ষমতা দিয়ে ধ্বংস করবে বলে হুমকি প্রদান করে।

 

তখন রাস্তার পাশে র‌্যাব-৭,চট্টগ্রামের একটি টহলগাড়ি দেখে তাদেরকে বিষয়টি অবগত করে।ফরহাদের তথ্যের ভিত্তিতে র‌্যাব-৭,চট্টগ্রামের একটি আভিযানিকদল চট্টগ্রাম মহানগরীর হালিশহর থানাধীন বৌ বাজার এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে আসামী ইব্রাহিম হোসেন(৪২),পিতা-মৃত মৌলভী এরশাদ হোসেন,সাং-মধ্যম রায়পুর,থানা- হালিশহর,জেলা-চট্টগ্রাম মহানগর’কে আটক করতে সক্ষম হয়।এসময় আসামীর কাছ থেকে প্রতারনা মূলক বিভিন্ন সরঞ্জাম জব্দ করা হয়।

 

পরবর্তীতে আসামীকে জিজ্ঞাসাবাদে জানায় যে,সে একজন ভুয়া কবিরাজ এবং প্রতারনার মাধ্যমে মানুষকে বিভিন্নভাবে তাবিজ পানি পড়াসহ বিভিন্ন কৌশলের মাধ্যমে অসহায় নারীদের নিয়ে এসে তাদের ইচ্ছার বিরুদ্ধে শারীরিক সম্পর্ক করে এবং তাদের নিকট হইতে প্রতারনার মাধ্যমে টাকা ছিনিয়ে নেয় বলে স্বীকার করে।

গ্রেফতারকৃত আসামী সংক্রান্তে পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের নিমিত্তে চট্টগ্রাম জেলার সংশ্লিষ্ট থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published.

error: Content is protected !!