শিক্ষাঙ্গনের ব্যবস্থাপকদের প্রতি খোরশেদ আলম সুজন।

ক্যাম্পাসে আমলাতন্ত্র নয়,অভিভাবকতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করুন।

0 ১০০

ক্যাম্পাসে আমলাতন্ত্র নয়,অভিভাবকতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করার জন্য শিক্ষাঙ্গনের ব্যবস্থাপকদের প্রতি আহবান জানিয়েছেন চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের সাবেক প্রশাসক এবং চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি খোরশেদ আলম সুজন।গতকাল শনিবার(২৯ জানুয়ারি ২০২২ইং)এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে তিনি এ আহবান জানান।

এসময় সম্প্রতি দেশের বিভিন্ন শিক্ষাঙ্গনে অস্থিরতা ছড়িয়ে পড়ায় উদ্বেগ প্রকাশ করে সাবেক কেন্দ্রীয় এ ছাত্রনেতা বলেন,আমি নিজেও ছাত্ররাজনীতি করেছি।দীর্ঘ সময় ছাত্রদের অধিকার আদায়ের সংগ্রামের সাথে সরাসরি সম্পৃক্ত ছিলাম।ছাত্র রাজনীতির সর্বোচ্চ পর্যায় শেষে বর্তমানে আমি একজন অভিভাবক।আমার সন্তানেরাও উচ্চ শিক্ষার্থে বিভিন্ন শিক্ষাঙ্গনে লেখাপড়া করছে।কিন্তু মাঝে মাঝে শিক্ষাঙ্গনে বিভিন্ন ইস্যুতে যেভাবে অস্থিরতা সৃষ্ঠি হয় তাতে অন্যান্য অভিভাবকদের মতো তিনি নিজেও উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েন।

তিনি আরো বলেন,বিভিন্ন শিক্ষাঙ্গনে যে ব্যবস্থায় ব্যবস্থাপক নিয়োগ হয় সেখানে গিয়ে তারা আমলাতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করে।সেখানে অভিভাবকতন্ত্র হারিয়ে যায়।সবকিছু গায়ের জোরে প্রতিষ্ঠার চেষ্টা করা হয়।পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে বছরের পর বছর সেশনজট লেগে থাকে।ফলে শিক্ষার্থীদের অমূল্য শিক্ষাজীবন নষ্ট হয়।শিক্ষার নামে সেখানে বণিকতন্ত্র প্রতিষ্ঠা হয়।সেখানে গবেষণার নামে বছরের পর বছর ছুটিতে থাকে শিক্ষকেরা।

আবার কেউ কেউ বিভিন্ন প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ে খন্ডকালীন চাকুরিতে নিয়োজিত হন।শিক্ষার মূল কাজ থেকে দূরে থেকে তারা শিক্ষাবহির্ভূত কাজের সাথে জড়িয়ে পড়ে।এর ফলে শিক্ষার্থীদের শিক্ষাজীবন চরম অনিশ্চয়তার মধ্যে থাকলেও এ ব্যাপারে তাদের কোন ভ্রুক্ষেপ নেই।হোস্টেলে সাধারন শিক্ষার্থীদের কোন অধিকার নেই।

অধিকহারে গাদাগাদি করে তাদের হোস্টেলে থাকতে হয়।যখন যে দল ক্ষমতায় থাকে তথন সে দলের আশীর্বাদপুষ্ট ছাত্রসংগঠনরা হোস্টেলগুলো নিয়ন্ত্রণ করে।হোস্টেলে সিট বরাদ্দের ক্ষেত্রে কোন নিয়ম নীতি মানা হয় না।হোস্টেলে খাবারের পরিবেশ হয় অত্যন্ত নিম্নমানের।পরিবার পরিজন ফেলে যারা সেখানে জ্ঞান অর্জন করতে আসে তাদের প্রতি সত্যিকারের অভিভাবক সুলভ আচরন করা হয় না।

দিনের পর দিন এসব অবস্থা চললেও এর প্রতিকারের কোন উদ্যোগ গ্রহণ করা হয় না। সাধারণ ছাত্ররা মূলত গিনিপিগের মতো ব্যবহৃত হতে থাকে।এভাবে চলতে চলতে একসময় তাদের সে ক্ষোভগুলো বিশাল আকারে বিস্ফোরিত হয়। কখনো সে ক্ষোভ থেকে স্বউদ্যোগে আবার কখনো উসকানিতে পড়ে অস্থিরতা সৃষ্টি হয় প্রাণের ক্যাম্পাসগুলোতে।যারা আগামী দিনে ভবিষ্যত নাগরিক হবে তারা কিভাবে বেড়ে উঠবে সেটা নিয়ে কেউ ভাবে না।তাদের মানসিক অবস্থা বোঝার চেষ্টা করা হয় না।ক্যাম্পাসকে টাকা উপার্জনের হাতিয়ার হিসেবে গ্রহণ করতে গিয়ে ছাত্ররাজনীতিকেও কুক্ষিগত করা হয় কোন কোন ক্ষেত্রে।ক্যাম্পাস ভিত্তিক বিভিন্ন বানিজ্যের সাথে তারা অহরহ জড়িয়ে পড়ছে।

এসব বাণিজ্যের লোভে আধিপত্য বিস্তারে জড়িয়ে পড়ছে বিভিন্ন গ্রুপ।ফলশ্রুতিতে সৃষ্টি হয় বিভিন্ন উপগ্রুপ,হয় মারামারি আর খুনাখুনি।তিনি বিভিন্ন ক্যাম্পাসে ক্ষোভ ও অস্থিরতা বন্ধে নানামূখী পদক্ষেপ গ্রহণ করার উপর গুরুত্বারোপ করেন। যেমন: শিক্ষার্থীদের সেশনজট কমাতে হবে।

হোস্টেলে সিট বরাদ্দের ক্ষেত্রে নিয়ম নীতি মানতে হবে। হোস্টেলে থাকার ব্যবস্থাকে মানবিক করতে হবে। ক্যাম্পাসে পেশীতন্ত্র প্রতিষ্ঠার চেষ্টা বন্ধ করতে হবে। ক্যাম্পাস ভিত্তিক বাণিজ্য বন্ধ করতে হবে। সর্বোপরি শিক্ষার বণিকতন্ত্র রোধ করতে পারলেই যখন তখন ক্যাম্পাসে ক্ষোভ এবং অস্থিরতা সৃষ্টি বন্ধ হবে বলে মত প্রকাশ করেন সাবেক ছাত্রনেতা খোরশেদ আলম সুজন।

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published.

error: Content is protected !!