সন্দ্বীপের চর ও নদীর মাঝে ব্যক্তি উদ্যোগে নির্মানাধীন ক্রসড্যাম অনেক দৃশ্যমান।

নির্মান ব্যয় ৬০ লক্ষ টাকা।

0 ১৮৫,৯৬২

দীর্ঘ দুই যুগেরও অধিক সময় ধরে মেঘনার করাল গ্রাসে বা সর্বনাশা নদী ভাঙ্গনের ফলে সন্দ্বীপের মুল ভু-খন্ডের প্রায় ৩ ভাগের ২ ভাগ ভুমি নদী গর্ভে হারিয়ে গিয়েছিলো।বিলুপ্ত হয়ে গিয়েছিলো ৫/৬ টি ইউনিয়ন।ফলে কয়েক হাজার পরিবার হয়ে গিয়েছে জলবায়ু উদ্বাস্তু বা ভুমিহীন।বাধ্য হয়ে সন্দ্বীপের বিভিন্ন অরক্ষিত জায়গায় ও দেশের বিভিন্ন প্রান্তে গিয়ে কোন মতে মাথা গোঁজার ঠাঁই নিলেও বেশির ভাগ পরিবার এখনো পর্যন্ত মানবেতর জীবন কাটাচ্ছে।সেই ভেঙ্গে যাওয়া নদীতে বিগত কয়েক বছর ধরে ধীরে ধীরে ভাঙন বন্ধ হয়ে জেগে উঠছে বিশাল নতুন নতুন চর।কিছু চর ইতিমধ্যে বসবাস উপযোগী হওয়ার পর নোয়াখালীর ভুমি দস্যুরা তাদের দখলে নিয়ে সেগুলোকে নোয়াখালীর অংশে পরিনত করেছে।আর তাতে সফল হয়ে পুরো সন্দ্বীপের চরগুলোকে ছিনিয়ে নেওয়ার বিভিন্ন অপকৌশল চালাচ্ছে তারা।

অন্যদিকে সেগুলো ফিরিয়ে দেওয়ার বা উন্নয়নে যখন কোন ভুমিকাই রাখছেনা সরকার,তখন সন্দ্বীপের লাগোয়া বাকি চর গুলোকে সন্দ্বীপের আয়ত্তে রাখা এবং ভুমি পুনঃরোদ্ধার ও সেগুলোকে পলি জমিয়ে আস্তে আস্তে উচ্চতা বাড়িয়ে বসবাস ও চাষাবাদ উপযোগী করতে বেসরকারী বা ব্যক্তি উদ্যোগে নেওয়া হয়েছে একটি বিশাল পরিকল্পনা।

যাকে কেউ ক্রসড্যাম বা কেউ ভুমি পুনঃরোদ্ধারে বাঁধ নির্মান হিসেবে আখ্যায়িত করছেন।এবং সেটির নির্মান ব্যয় ধরা হয়েছে প্রায় ৬০ লক্ষ টাকা।সে কাজের অগ্রগতিও হয়েছে প্রায় ৪০%।যা এখন দৃশ্যমানও।

উদ্যোক্তারা জানিয়েছেন আগামী ২০ দিনে মধ্যে শেষ হবে পুরো বাঁধ নির্মান কাজ।সেই বাঁধ নির্মান কাজ দেখতে প্রতিনিয়ত সেখানে মানুষের ভীর জমছে।অনেকে স্বপ্ন দেখছেন সেই হারিয়ে যাওয়া জন্ম ভিটা আবারো ফিরিয়ে পাবেন এবং সেখানে পুরনো জায়গায় নতুন করে বাঁধবেন আবাস স্থল। জমিতে করবেন চাষাবাদও।

উক্ত বাঁধ নির্মান কাজ সরেজমিনে পরিদর্শন করতে গিয়ে দেখা মেলে সে বাঁধ নির্মান কাজের মুল উদ্যোক্তা কালাপানিয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আলিমুর রাজি টিটুর সাথে।

তিনি বলেন,সন্দ্বীপের কয়েকটি ইউনিয়নের দেশে ও প্রবাসে থাকা ধনাঢ্য চিত্তবান মহৎ লোকের আর্থিক সহযোগিতায় এই বাঁধ নির্মান হচ্ছে।আমাদের ও বিশেজ্ঞদের ধারনা এই বাঁধ নির্মান হলে ২ পাশে পলি জমে পুরো চর এলাকা উচু হতে হতে সন্দ্বীপের মুল ভু-খন্ডের সমান উচ্চতায় পৌঁছে যাবে,তখন সে ভুমি প্রশাসনে সহযোগিতায় প্রকৃত মালিকের মাঝে বন্টনের মাধ্যমে আমরা সকলকে ফিরিয়ে দিতে পারবো।তাই যারা এ কাজে আর্থিক সহযোগিতা দিচ্ছেন তাদের প্রতি আমি ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানাই।

এছাড়াও ড. মোহাম্মদ মোসলেম উদ্দিন মুন্না, সভাপতি,ওশানোগ্রাফি বিভাগ,চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় এবং কাজের সাথে সম্পৃক্ত কালাপানিয়া আওয়ামী লীগ সভাপতি মনিরুজ্জামান আরমান জানান,আমরা সন্দ্বীপিরা বার বার প্রতারিত হচ্ছি। বিভিন্ন ছলচাতুরি এবং অপকৌশলের কাছে হার মেনে আমরা আমাদের স্রষ্টার ফিরিয়ে দেওয়া ভুমির মালিকানাও পাচ্ছিনা।

ইতিমধ্যে অনেক ভুমি বেদখল হয়ে গেছে।তাই আমরা এ বাঁধ নির্মানের মাধ্যমে আমাদের ভুমির উন্নয়ন ঘটাতে পারলে বেড়িবাঁধ সহ বিভিন্ন অরক্ষিত জায়গায় যারা বসবাস করছে তাদের সেখানে পুনবাসনের ব্যবস্থা সহ যার ভুমি তাকে ফিরিয়ে দিতে পারবো।কারন সরকার বা জনপ্রতিনিধিরা সন্দ্বীপের সাথে সব সময় বিমাতাসুলভ আচরন করেছে।

রোহিঙ্গাদের জন্য সরকার অনেক কার্যকরী উদ্যোগ ও শতশত কোটি টাকার প্রকল্প হাতে নিয়েছে।কিন্তু আমাদের নদী ভাঙ্গন কবলিতরা তাদের চেয়েও বেশী অমানবিক জীবন যাপন করলেও তাদের স্বার্থের কথা চিন্তা করেনা।তাই আমাদের যে সমস্ত দানবীর ও উদ্যোক্তারা এ উদ্যোগ নিয়েছেন তাদের আমরা সাধুবাদ জানানো সহ এটিকে নিশ্চিত সফল রুপ দিতে সকলকে আরো বেশি বেশি আর্থিক ও মানষিক সাপোর্ট নিয়ে এগিয়ে আসার আহব্বান জানাই।

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published.

error: Content is protected !!