সন্দ্বীপে ইয়েলো ক্রাউন চাষ করে তাক লাগালেন ইদ্রিস আলম।

0 ৬৮৭,৯৯২

সন্দ্বীপে নতুন জাতের ইয়েলো ক্রাউন তরমুজ, প্রকাশ রঙ্গিলা তরমুজ সফল ভাবে চাষ করে রিতীমত পুরো সন্দ্বীপে সাড়া ফেলে দিয়েছেন কৃষক ইদ্রিস আলম। প্রথবারের মতো সফল ভাবে এ হলুদ রংয়ের তরমুজ চাষ করে উপজেলায় চমক লাগিয়ে দেওয়ার পর বিভিন্ন উচ্চ পদস্থ কর্মকর্তা সহ সকল কৃষি প্রেমী ও অগ্রগামী কৃষকদের আকর্ষনের কেন্দ্র বিন্দুতে পরিনত হয়েছে তার এই রঙ্গিলা তরমুজ ক্ষেত।শুধু তাই নয় পাশাপাশি, কেঁচো কম্পোস্ট বা ভার্মি কম্পোষ্ট সার উৎপাদন, পিঁয়াজ,বেগুন,পেঁপে, লাউ,কলা, কুচা ও বিভিন্ন ফলগাছ ইত্যাদি ফসলের ব্যাপক ফলনে একটি আদর্শ কৃষি প্রদর্শনী কেন্দ্রে পরিনত হয়েছে তার জমিন গুলো।

১০ ফেব্রুয়ারী শুক্রবার বিকালে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায় সন্দ্বীপ মুছাপুর ইউনিয়নের পন্ডিতের হাটের দক্ষিন পাশে মাচায় মাচায় ঝুলছে শতশত ইয়েলো ক্রাউন বা রঙ্গিলা তরমুজ।তিনি ৫০ শতক জমিতে মাচানে এই তরমুজ চাষ করে প্রতিটি মাচান নেট দ্বারা আবৃত করেছেন । পোকামাকড়ের হাত থেকে রক্ষায় মাচার মাঝখান দিয়ে ফেরোমেন ও ইয়েলো ট্যাপ লাগানো আছে। মাচানের ভিতরে ঢুকতে দেখা যায়, শতশত তরমুজে মাচানগুলা ভরপুর। প্রতিটি গাছে ৫থেকে ৮ টি করে রঙ্গিন বড় তরমুজ সহ অনেক ছোট ছোট তরমুজ ঝুলে আছে। একেকটি তরমুজ দুই থেকে আড়াই কেজি ওজনের। খেতে সুস্বাদ এ তরমুজের বাইরের অংশ হলুদ হলেও ভেতরে টকটকে লাল এবং খুবই পুষ্টিগুন সমৃদ্ধ। তার ওই তরমুজ ক্ষেতের মাচান ভর্তি তরমুজ দেখতে স্বপরিবারে হাজির হয়েছেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সম্রাট খীসা, নির্বাহী ম্যাজিস্টেট মোঃ মঈন উদ্দিন ও উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মাসুদ হোসেন। এছাড়াও কয়েকজন উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা ও সংবাদ কর্মী সহ অনেক আগ্রহী কৃষক। সকলে এই নতুন ফলের ব্যাপক ফলন ও চাষ পদ্ধতি দেখে সেটির প্রতিফলন ঘটাতে নিজেরা আগ্রহী উঠেছেন খুব। কারন মাত্র ২ মাসে বা ৬০ দিনে এই তরমুজ বীজ রোপন করে ফসল বিক্রির উপযুক্ত করে ফেলা যাচ্ছে। এবং এটি বারমাসী ফসল।

এক আওয়ামী আদর্শের যুবলীগের সক্রিয় নেতা ইদ্রিস আলম কিভাবে কুষি কাজে ঝুঁকে হঠাৎ করে সফল কৃষক বনে গেলেন তার উত্তর ও ছিলো অবাক হওয়ার মতো। তিনি বলেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার বক্তব্য বলেছিলেন এক ইঞ্চি জমি ও খালি রাখা যাবেনা, সকলে কৃষিতে মনোনিবেশ করুন যাতে খাদ্য সংকট বা দুর্ভিক্ষের স্বীকার হতে না হয়। এই হৃদয় ছোঁয়া বক্তব্যে অনুপ্রাণীত হয়ে আমি তিন বছর আগে কৃষি কাজে হাত দেওয়ার পর উপজেলা কৃষি অফিস রঙ্গিলা তরমুজ চাষের জন্য বীজ সার ও প্রশিক্ষণ দিয়ে সহযোগিতা করছেন।এবং আমার ভালো ফলন দেখে অনেক কর্মকর্তা,কৃষক ও কৃষি প্রেমী সবাই আসছেন বলে আমি খুবই আনন্দিত। প্রধান মন্ত্রীর বক্তব্যে অনুপ্রানীত হয়ে কৃষিতে মনোনিবেশ করেছি বলে ওনাকে আমার রঙ্গিলা তরমুজ উপহার দিতে চাই, যদি সে সুযোগ পাই তাহলে আমৃত্যু আমি কৃষি কাজে লেগে থাকবো।

তরমুজ চাষী ইদ্রিস আলম আরো বলেন আমার খরচ হয়েছে প্রায় ২৫ হাজার টাকা। কিন্তু ভালো ফলন ও ক্রেতারা প্রতি কেজি তরমুজ বাজারে ৮০ থেকে ১০০ টাকায় কিনছেন বলে কমপক্ষে ২ লক্ষাধীক টাকা আমি লাভ করতে পারবো।

সদ্য বিদায়ী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মাসুদ হোসেন মুঠোফোনে বলেন কৃষক ইদ্রিসকে বীজ ও প্রযুক্তিগত সবধরনের পরামর্শ ও সহায়তা দিয়েছি।চট্টগ্রামের কেবল মাত্র সাতকানীয়া আর সন্দ্বীপ এ ফল রোপন করা হয়েছে। ইদ্রিসের সাফল্য দেখে আমরা গর্বিত অন্যদিকে ওর জমি দেখে অন্য চাষীরাও আগ্রহ দেখাচ্ছেন,ভবিষৎতে অনেক কৃষক এ লাভজনক তরমুজ চাষ করবে সেটে আমাদের বিশ্বাস । এতে শিক্ষিত তরুণরাও চাষাবাদে এগিয়ে এলে কৃষি সেক্টর আরো সমৃদ্ধ হবে সে প্রত্যাশা করছি।

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published.

error: Content is protected !!