সন্দ্বীপে জেলেদের বিক্ষোভ,জলদস্যুর উৎপাত বন্ধ হলেও কোস্টগার্ডের অত্যাচারে অতিষ্ট জেলেরা

0 ৩০০,৫৫১

সন্দ্বীপে সারা বাংলাদেশের ন্যায় সাগরে মাছ ধরার ৬৫ দিনের নিষেধাজ্ঞা উঠে গেলো গত ২৩ জুলাই।আইনের প্রতি শ্রদ্ধা রেখে এ ৬৫ দিন রুজি রোজগারহীন ছিলেন জেলেরা। আর ২৪ জুলাই নতুন স্বপ্ন নিয়ে সাগরে মাছ ধরতে নামেন তারা।কিন্তু তাদের সেই স্বপ্ন একদিনেই বিষাদে পরিনত হয়।সাগরে যাওয়া মুছাপুর ও আজিমপুরের জেলেদের উপর হঠাৎ করে অমানুষিক শারিরীক নির্যাতন চালায় কোস্টগার্ডের লোকজন।

ওদের ব্যাপক মারধর ও অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে প্রায় ১০/১২ টি জাল,৫০/৬০ টি প্লাষ্টিকের ড্রাম সহ ৪ জন জেলেকে ধরে নিয়ে যায় কোস্টগার্ড কর্তৃপক্ষ।এমনকি তাদের উপর মহল থেকে গুলি করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে মর্মে ভয় ভীতি প্রদর্শন করে।এরপর কূলে নিয়ে এসে ২/৩ টি জাল ও কয়েকটি গ্যালন পুড়ে ফেলে তাদের ছেড়ে দেয়।

জেলে প্রতিনিধিদের ধারনা বাকি জ্বাল ও ড্রাম গুলো কোস্টগার্ড এভাবে ছিনিয়ে নিয়ে অন্যত্র বিক্রি করে ফেলে সব সময়।এছাড়াও মাছ উদ্ধারের নাম করে তারা কিছু মাছ গরীব মানুষ ও মসজিদ মাদ্রাসায় বিলি করার পর বাকি গুলো গোপনে মাছ বেপারীদের ডেকে এনে তাদের কাছে বিক্রি করে দেয়।যার পুরো টাকাটা ঢুকে কোস্ট গার্ডের পকেটে।এছাড়াও অনেক মাছ তারা তালতলী,কেন্জাতলী ও উপজেলা কমপ্লেক্সের বিভিন্ন হোটেলে ফ্রিজআপ রেখে পরে গ্রামের বাড়িতে নিয়ে যায় ছুটিতে যাওয়ার সময়।এতসব অনৈতিক কাজ ও নির্যাতনে অতিষ্ট হয়ে জেলেরা ক্ষোভে ফেটে পড়েছেন।

গতকাল ২৭ জুলাই প্রায় ৫০/৬০ জন জেলে একত্রিত হয়ে এসব নির্যাতনের প্রতিকার চেয়ে উপজেলা কমপ্লেক্স এলাকায় মৎস্য কর্মকর্তা ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার অফিসের সামনে বিক্ষোভে ফেটে পড়েন।তারা বলেন আমরা লক্ষ লক্ষ টাকা ঋন নিয়ে সাগরে নেমেছি এখন কোস্টগার্ড আমাদের উপর এভাবে জুলুম,নির্যাতন চালিয়ে আমাদের চরম হুমকির মুখে ফেলে দিয়েছে।জলদস্যুদের থেকে মুক্ত হওয়ার পর এখন কোস্টগার্ড যেনো সে ভুমিকায় অবর্তীর্ন হয়েছে।তাই আমাদের শতশত জেলে পরিবার চরম খাদ্য অনিশ্চয়তা সহ ঋন খেলাপী হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে।

তাদের বিক্ষোভের সাথে একাত্মতা পোষন করে মুছাপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আবুল খায়ের নাদিম,ইউপি সদস্য সেলিম,আজিমপুর ইউনিয়ন আওয়ামীলিগের সাধারন সম্পাদক মন্জুর হোসেন ভেন্ডর সহ,সন্দ্বীপ পুজা পরিষদের সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক বাদল রায় স্বাধীন,জন্মাষ্টমী উদযাপন পরিষদের সাধারন সম্পাদক মাষ্টার বিধান দাস সহ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সন্দ্বীপে অনুপস্থিত থাকায় উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা এমদাদুল হকের নিকট তাদের অভিযোগ সমুহ পেশ করেন এবং তা থেকে মুক্তির আবেদন জানান।

এছাড়াও মৎস্য কর্মকর্তাকে একজন সৎ ও নীতিবান কর্মকর্তা উল্লেখ করে বলেন আপনি ব্যতিত শুধু কোস্টগার্ডের সাগরে একক অভিযান সম্পুর্ন জেলেদের দমন পীড়ন ও নোয়াখালীর জেলেদের সুযোগ তৈরি করে দেওয়ার সামিল বা অন্য এজেন্ডা বাস্তবায়ন বলে তারা উল্লেখ করেন।

সব অভিযোগ শুনে মৎস্য কর্মকর্তা এমদাদুল হক কোস্টগার্ডের কন্টিনজেন্ট কমান্ডারকে ফোন করে জেলেদের বিক্ষোভ প্রদর্শন ও অভিযোগের প্রেক্ষিতে ওনার সাথে যৌথ অভিযান ব্যতীত একক কোস্টগার্ডকে অভিযান না চালাতে অনুরোধ জানান।এরপর জেলে প্রতিনিধিরা উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান মাঈন উদ্দিন মিশনের সাথে দেখা করে তাদের দাবী দাওয়া উথ্বাপন করেন।আগামীতে এই রকম নির্যাতনের শিকার হলে তারা বৃহত্তর আন্দোলন গড়ে তুলবেন বলে ঐক্যমতে পৌঁছান।

এ ব্যাপারে কোস্টগার্ডে কন্টিনজেন্ট কমান্ডারের 01769-442250 নাম্বারে ফোন করে মতামত জানতে চাইলে নাম্বারটি আনরিচএ্যাবল বলে কোন মন্তব্য পাওয়া যায়নি।

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published.

error: Content is protected !!