সন্দ্বীপে হিন্দু পরিবারকে দেশ ত্যাগের হুমকির অভিযোগ কাউন্সিলরের ফয়সালের বিরুদ্ধে।

0 ৪৫৫,৪৭১

চট্টগ্রামের সন্দ্বীপে হিন্দু পরিবারকে দেশ ছেড়ে ভারতে চলে যাওয়ার হুমকির অভিযোগ উঠেছে সন্দ্বীপ পৌরসভার ৯ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর মোক্তাদের মাওলা ফয়সালের বিরুদ্ধে।গত ২৯ আগষ্ট পরিবারটির ছোট ছেলে এইচএসসি পরীক্ষার্থী বিপ্লব জলদাস সন্দ্বীপ উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা সম্রাট খীসার বরাবর এ বিষয়ে একটি লিখিত অভিযোগ করেন।

লিখিত অভিযোগে মঙ্গল জলদাসের ছেলে বিপ্লব জলদাস ইউএনও বরাবরে কাউন্সিলর কর্তৃক তার পরিবারবর্গকে দেশত্যাগের হুমকি ও জীবনের নিরাপত্তা চেয়ে লিখেন,আমরা নিন্ম জেলে পরিবার হই। দীর্ঘদিন যাবত আমাদের বসত বাড়ী ভিটা মাটি দখল করার জন্য অত্র ওয়ার্ড কাউন্সিলর কর্তৃক আমাকে যেকোন জায়গায় দেখলে দেশ ত্যাগ করার জন্য হুমকি দেয়।আমার তিন ভাই প্রবাসে থাকে আর দুই ভাই সাগরে মাছ ধরি,সাম্প্রতিক সময়ে ওদের ভয়ে এইচএসসি পরীক্ষা বাদ দিয়ে প্রাণের ভয়ে চট্টগ্রামে আশ্রয় নিই।তার মধ্যে আমাদের পাশের বাড়ির সাথে মামলা চলমান থাকাবস্থায় প্রতিপক্ষের ঘরে আগুন দেয়াকে কেন্দ্র করে আমাদেরকে মামলার আসামী করে দেয় বিধায় আমাদের পরিবারবর্গ হুমকির মুখে পড়ে যায়।তার মধ্যে আমাদের পরিবারের লোকজন অনাহারে অধ্যহারে দিন কাটাচ্ছে।

ঘটনাটি জানাজানি হলে অভিযোগটির বিষয়ে বিপ্লব জলদাস গণমাধ্যমকে বলেন,স্থানীয় কাউন্সিলর মোক্তাদের মাওলা ফয়সাল তাদের প্রতিপক্ষ সুধির দাস থেকে অনৈতিক সুবিধা গ্রহণ করে আদাজল খেয়ে তার পরিবারের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছেন।তার অংশ হিসেবে তিনি চলতি বছরের মে মাসের ১০ তারিখ সকাল দশটার দিকে বিপ্লবদের বাড়ির পাশের শ্রীদাম দাসের দোকানের সামনে এই হুমকি প্রদান করে।

এরপর থেকেই অভিযুক্ত কাউন্সিলরের প্রকাশ্য ইন্ধনে তাদের বিরুদ্ধে একেরপর এক ষড়যন্ত্রমূল ঘটনা ও মিথ্যা মামলা দায়ের করছেন সুধির দাসের পরিবার। সর্বশেষ তাদের বসববাড়িতে রহস্যজনক অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটলে সেখানেও তার পরিবারকে অন্যায় ভাবে দায়ী করা হয় বলে তিনি জানান।

হিন্দু মহাজোটের মহাসচিব বলেন,ঘটনাটি তাদের নজরে এসেছে।এবিষয়ে ভুক্তভোগী পরিবারের সাথে যোগাযোগ করে ঘটনার সত্যতা নিশ্চিতের মাধ্যমে অভিযুক্ত কাউন্সিলরের পদত্যাগসহ দ্রুত গ্রেফতারে দাবী জানানো হবে।

অভিযোগটি দেওয়ার পেছনে সাংবাদিকদের ইন্ধন রয়েছে বলে পাল্টা অভিযোগ করেন অভিযুক্ত কাউন্সিলর মুক্তাদের মাওলা ফয়সাল।তিনি বলেন, আমি এই রকম কোন কথাই কখনো বলিনি।আমার সাথে অভিযোগকারী বিপ্লব জলদাসের সাথে গত ৬ মাসেও দেখা হয়নি।তাদের দুই পরিবারের আন্তঃকোন্দলে আমাকে জড়ানো হচ্ছে।

সন্দ্বীপ উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা সম্রাট খীসা বলেন, বিষয়টি তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। কেউ যদি অন্যায় করে তবে তার শাস্তি হবে।

এদিকে কাউন্সিলরের যোগসাজশে এই ঘটনার পর বিপ্লব জলদাসের প্রতিবেশি সুধীর দাসের পরিবারের সাথে বিরোধের জের ধরে পরিকল্পিত থানা পুলিশের সহায়তায় মিথ্যা মামলার ঘটনা ঘটেছে বলে অভিযোগ করে স্থানীয় এলাকাবাসী।পুলিশি হয়রানীর কারণে এইচএসসি পরীক্ষার্থী বিপ্লব জলদাসের পরীক্ষা দেওয়াও ব্যহত হয় বলে তারা বলেন।মিথ্যা মামলা ও হয়রানী থেকে রেহাই পেতে এখনো ঘর ছেড়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন ভুক্তভোগী পরিবারের বিপ্লব জলদাসসহ তার ভাই।তারা আরো বলেন,সঠিক তদন্ত করে দোষীদের বিচারের আওতায় আনা হলে সকল ঘটনার রহস্য উৎঘাটন হবে।

কাউন্সিলরের বিরুদ্ধে অভিযোগের প্রেক্ষিতে সন্দ্বীপ পৌরসভা মেয়র মোক্তাদের মাওলা সেলিমের মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করেও কোন সাড়া পাওয়া যায়নি।

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published.

error: Content is protected !!