এমপিওভুক্তির আশায় দেড় যুগ আবুল কাশেম হায়দার মহিলা কলেজ।

0 ১৮৫

এমপিওভুক্তির আশায় দেড় যুগ পেরিয়ে গেছে ১৮ বছর।দেড়যুগেও কোনো গতি হলো না চট্টগ্রামের দ্বীপ উপজেলা সন্দ্বীপের একমাত্র বেসরকারি নারী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান আবুল কাশেম হায়দার মহিলা কলেজ।কোন একদিন এমপিওভূক্ত হবে- সেই আশাতেই নারী শিক্ষায় আলো ছড়াতে খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে চলছে এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটি।

সন্দ্বীপের একটি সরকারি ও চারটি বেসরকারি কলেজের মধ্যে তিনটি বেসরকারি কলেজের ইতোমধ্যে এমপিওভুক্তি সম্পন্ন হয়েছে। সন্দ্বীপ উপজেলায় শুধু এ মহিলা কলেজটি এমপিওভুক্তির বাইরে রয়েছে। ফলে হতাশ কলেজে অধ্যয়নরত শিক্ষার্থী ও কর্মরত শিক্ষক-কর্মচারীরা।

২০০৩ সালে সন্দ্বীপের বিশিষ্ট শিল্পপতি ও শিক্ষানুরাগী আবুল কাশেম হায়দার তার নামে সন্দ্বীপের হারামিয়া এলাকায় কলেজটি প্রতিষ্ঠা করেন। তিনি নিজ এলাকায় পিছিয়ে পড়া নারীদের উচ্চ শিক্ষার সুযোগ সৃষ্টি করতে এক একর ৪৯ শতক ভূমির উপর কলেজটি প্রতিষ্ঠা করেন।

হারামিয়া ইউনিয়নের মালেক মুন্সির বাজার সংলগ্ন সন্দ্বীপ ২০ শয্যা হাসপাতাল ও গুপ্তছড়া সড়কের পাশে কলেজটি অবস্থিত। কিন্তু প্রতিষ্ঠার ১৮ বছর পরও কলেজটি এমপিওভুক্ত না হওয়ায় কলেজের প্রায় ১৯ শিক্ষক-কর্মচারী দীর্ঘদিন ধরে মানবেতর জীবনযাপন করছেন।

জানা যায়, ২০০৪ সালে আবুল কাশেম হায়দার মহিলা কলেজ চট্টগ্রাম মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড কর্তৃক ছাত্রী ভর্তিসহ প্রাথমিক পাঠদানের অনুমতি পায়। পরের বছর শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নির্দেশে শিক্ষা বোর্ড থেকে কলেজটি একাডেমিক স্বীকৃতি পায়। বর্তমানে কলেজটিতে ১০ জন শিক্ষক সামান্য বেতন-ভাতার বিনিময়ে ২৫০ ছাত্রীকে পাঠদান করেন। কলেজে কর্মচারীর সংখ্যা রয়েছে ৯ জন।

কলেজের অধ্যক্ষ মো. হানিফ বলেন, ‘কলেজ প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর থেকে শুধু পাবলিক পরীক্ষায় বোর্ড কর্তৃক নির্ধারিত ভর্তি ফি এবং ছাত্রীদের কাছ থেকে সামান্য বেতন নেওয়া হয়। তা থেকে শিক্ষক কর্মচারীদের বেতন দেওয়া হয়। প্রতিমাসে শিক্ষক-কর্মচারীদের বেতনভাতা বাবদ এক লক্ষ নয় হাজার টাকা ব্যয় হয়। কলেজ প্রতিষ্ঠাতা আবুল কাশেম হায়দার প্রতি মাসে প্রদান করেন এক লক্ষ দশ হাজার টাকা।’

অধ্যক্ষ জানান, শিক্ষকদের আন্তরিক প্রচেষ্টায় প্রতি বছর পাবলিক পরীক্ষায় শিক্ষার্থীদের ফলাফল সন্তোষজনক। প্রতিষ্ঠার পর ২০০৬ সালে ৮৫.৭১% এবং ২০০৯ সালে ৮৬.৮৪% পাস করে কলেজটি সন্দ্বীপে ১ম স্থান অধিকার করে। পরবর্তীতেও ফলাফলে সেই ধারাবাহিকতা রক্ষা করে। সরকারের সব নীতিমালা অনুসরণ করে এমপিওর জন্য বার বার আবেদন করেও কলেজটি এমপিওভুক্ত না হওয়ায় শিক্ষক-কর্মচারীরা মানবেতর জীবনযাপন করছেন।

এ ব্যাপারে স্থানীয় সংসদ সদস্য মাহফুজুর রহমান মিতা বলেন, ‘সরকার ইতোমধ্যে ঘোষণা করেছে প্রতিটি উপজেলায় বেসরকারি কলেজগুলো নির্দিষ্ট নিয়ম মোতাবেক পর্যায়ক্রমে এমপিওভুক্ত করা হবে। হয়তো আগামীতে অবশ্যই সন্দ্বীপের এই একমাত্র মহিলা কলেজটিও এমপিওভুক্তির আওতায় পড়বে। এছাড়া আমি গত কয়েক বছর আগে এ কলেজের উন্নয়নের জন্য ২ লক্ষ টাকা বরাদ্দ দিয়েছি, ভবিষ্যতেও আমার এ অনুদান অব্যাহত থাকবে।’

কলেজের বর্তমান গভর্নিং বডির সভাপতি হিসেবে আছেন সন্দ্বীপ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ সন্দ্বীপ উপজেলার সভাপতি মাস্টার শাহজাহান বি.এ। কলেজটি এমপিওভুক্ত না হওয়ার তিনিও হতাশা প্রকাশ করেন।

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published.

error: Content is protected !!