চট্টগ্রামের দুই সন্তানের পদোন্নতির আভাস

0 ৫৫,১১৪

চট্টগ্রাম থেকে এ মুহূর্তে কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগে দায়িত্ব পালন করছেন ৫ জন। এরা হলেন ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন, প্রেসিডিয়াম সদস্য; ড. হাছান মাহমুদ, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক; ওয়াসিকা আয়েশা খান, অর্থ ও পরিকল্পনা সম্পাদক; ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া, দপ্তর সম্পাদক; আমিনুল ইসলাম আমিন, উপ প্রচার সম্পাদক।

বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে, আগামিকালের ২২তম কাউন্সিলে সৃষ্ট নতুন নেতৃত্বেও থাকছেন উল্লিখিত নেতারা। এর মধ্যে পদোন্নতি হতে পারে ড. হাছান মাহমুদ ও আমিনুল ইসলামের। যুগ্ম সম্পাদক থেকে ১ নং যুগ্ম সম্পাদক অথবা প্রেসিডিয়াম মেম্বার হতে পারেন হাছান মাহমুদ, আর আমিনুল ইসলাম উপ প্রচার ও প্রকাশনা থেকে প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক হতে পারেন বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে আভাস পাওয়া গেছে।

সূত্র মতে, বিরোধী রাজনৈতিক দলকে ঘায়েল করতে এ মুহূর্তে হাছান মাহমুদই সেরা। প্রত্যুৎপন্নমতিত্ব, তথ্যভিত্তিক বক্তৃতা-বিবৃতি, উপস্থিত বাক্যবাণে বিরোধীশক্তিকে মোকাবিলা করার মত দলে যে কয়েকজন নেতা আছেন তাদের অন্যতম ড. হাছান মাহমুদ। সরকারের গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব সামাল দিয়ে একই সাথে দলের অর্পিত দায়িত্ব, উত্তরবঙ্গের সাংগঠনিক দায়িত্ব পালন করেছেন রাতদিন একাকার করে। সেসব কারণে আগামীকালের সম্মেলনে হাছান মাহমুদের পদোন্নতি হওয়ার সম্ভাবনা উজ্জ্বল বলে মনে করছেন রাজনীতি সচেতনরা। সম্প্রতি স্থানীয় সরকার মনোনয়ন বোর্ডের সদস্যও হয়েছেন তিনি।

এছাড়া ফের প্রত্যাবর্তন হতে পারে ২০তম কাউন্সিলে একেবারে কনিষ্ঠজন হিসেবে সাংগঠনিক সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পেয়ে ২১তম কাউন্সিলে বাদ পড়া ব্যারিস্টার মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল।

সূত্র মতে, চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগে আ জ ম নাছির সভাপতি ও মহিবুলকে সাধারণ সম্পাদক করার সমীকরণ আপাতত হোঁচট খাওয়ায় মাহতাব উদ্দিন চৌধুরী ও আ জ ম নাছির কমিটিই বহাল থাকছে চট্টগ্রাম মহানগরে। সেই হিসেবে কেন্দ্রীয় কমিটিতে আবারও নওফেলের জায়গা হতে পারে বলে ধারণা করছেন রাজনীতি-বিশেষজ্ঞরা।

তবে একেবারে তরুণ বয়সে চট্টগ্রামের প্রেস্টিজিয়াস খ্যাত কোতোয়ালী আসনে ঝানুদের বাদ দিয়ে এমপি অতপর উপমন্ত্রীর স্বাদ পাইয়ে দেওয়া মহিবুলকে কেন্দ্রীয় কমিটিতে জায়গা দেবেন কিনা সেটা প্রধানমন্ত্রীই ভালো জানেন। এক্ষেত্রে একজনের দুই পদ বর্জনের নীতিটাও এক ধরনের বাধা মনে করছেন রাজনীতি-সংশ্লিষ্টরা।

যদিও বর্তমান কমিটিতে এই নীতি পাশ কাটিয়ে জায়গা পাওয়া পাঁচ নেতাই কর্মঠ, ডায়নামিক। একইসাথে সরকার ও দলে জায়গা পাওয়া পাঁচ নেতৃবৃন্দ হলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, কৃষিমন্ত্রী ড. আবদুর রাজ্জাক, তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ, শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি।

আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটিতে ২০০২ সালের সম্মেলন থেকে আছেন ড. হাছান মাহমুদ। সেই সম্মেলন বন ও পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক হিসেবে অভিষেক হওয়া ড. হাছান ২০০৯ সালের জুলাই মাসে অনুষ্ঠিত ১৮তম সম্মেলনে ফের একই পদে বহাল থাকেন। ওই সময় তিনি সরকারের বন ও পরিবেশ প্রতিমন্ত্রী। ২০১২ সালের সম্মেলনে আওয়ামী লীগের প্রচার-প্রকাশনা সম্পাদক ও দলের অন্যতম মুখপাত্রের দায়িত্ব পান তিনি। ২০১৬ সালের সম্মেলনে স্বপদে বহাল থাকেন তিনি। ২০১৯ সালের ডিসেম্বরে সর্বশেষ সম্মেলনে পদোন্নতি পেয়ে তিনি দলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও অন্যতম মুখপাত্র মনোনীত হন।

একইভাবে আওয়ামী লীগ কেন্দ্রীয় কমিটিতে আমিনুল ইসলাম আমিনের অভিষেক হয় ২০০৯ সালের জুলাই মাসে অনুষ্ঠিত ১৮তম সম্মেলনে কার্যকরী কমিটির সদস্য হওয়ার মধ্য দিয়ে। এরপর ২০১২ সালে সদস্য, ২০১৬ সালে উপ প্রচার সম্পাদক ও ২০১৯ সালে ফের উপ প্রচার সম্পাদক মনোনীত হন তিনি। দলীয় দায়িত্বের বাইরেও গত একবছরে তিনি দায়িত্ব পালন করেছেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের ফেসবুক পেইজের সঞ্চালকের। এই দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে সমগ্র দেশের আওয়ামীপ্রেমিদের দৃষ্টি কাড়ার পাশাপাশি নিজের যোগ্যতা, সক্ষমতার পরিচয় দিয়েছেন আমিনুল ইসলাম। এসব কারণে এবার তার প্রমোশন হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে বলে জানা গেছে নীতিনির্ধারণী মহলে।

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published.

error: Content is protected !!