ডিএমপিতে শ্রেষ্ঠ থানা হিসেবে পল্লবী থানা স্বীকৃতি পেলেন।

অপরাধ দমনে ডিএমপিতে শ্রেষ্ঠ থানা হিসেবে স্বীকৃতি পেলেন পল্লবী থানা

0 ১০,১৩২

 

রাজধানীর পল্লবী থানা এলাকায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী,মাদক উদ্ধার ও জন-নিরাপত্তা বিধানসহ জানুয়ারিতে ভালো কাজের স্বীকৃতি হিসেবে ডিএমপি থেকে শ্রেষ্ঠ থানা হিসেবে স্বীকৃতি পেলেন পল্লবী থানা।এছাড়াও পল্লবী জোনে শ্রেষ্ঠ সহকারী পুলিশ কমিশনার(এসি)পুরস্কৃত হলেন,শাহ কামাল,এসআই হিসেবে শ্রেষ্ঠ পুরস্কার পেলেন জহির আহমেদ ও এএসআই হরিদাস রায়।

ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ(ডিএমপি)এর মাসিক অপরাধ পর্যালোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। ডিএমপি কমিশনার মোহাঃ শফিকুল ইসলাম বিপিএম(বার)এর সভাপতিত্বে রোববার সকাল ১০ টায় রাজারবাগ বাংলাদেশ পুলিশ অডিটরিয়ামে ডিসেম্বর ২০২০ মাসের মাসিক অপরাধ পর্যালোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।

ডিএমপিতে শ্রেষ্ঠ থানা হিসেবে পুরস্কৃত হওয়ায় পল্লবী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা(ওসি)পারভেজ ইসলাম বলেন,গত বছর মে মাসে যোগদানের পরে চলতি বছর পযর্ন্ত এই থানায় মাদক বিরোধী অভিযানে মাদক ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে মাদক মামলা হয়েছে ৬৮৯ টি যার মধ্যে ৯৭৫ জন গ্রেফতার হয়েছে।এ মাদক বিরোধী অভিযানে ১৫ কেজি ১৪৩ গ্রাম হেরোইন,৬৯,৫৬৫ পিছ ইয়ারা ট্যাবলেট, ১২৮ কেজি ১৬৮ গ্রাম গাঁজা, ৪০৩ বোতল ফেন্সিডিল, ১৫৫ বোতল চোরাই মদ এবং ৬০ টি বিয়ার উদ্ধার করেছি। অপ্রতিরোধ্য মাদক অধ্যুষিত মহল্লা মিল্লাত ক্যাম্পসহ বেশ কয়েকটি ক্যাম্পে এক মাসে অভিযান চালিয়ে ১৫২ জন মাদক ব্যবসায়ী গ্রেফতার ও ১০১ টি মামলা দিতে পেরে ডিএমপি পুলিশ কমিশনার এর নিকট থেকে পুরুষ্কৃত হয়েছি। এবং ভালো কাজ করায় মিরপুর জোনের শ্রেষ্ঠ অফিসার ইনচার্জ (ওসি) হিসেবে ৩ বার পুরস্কৃত হয়।

তিনি আরো বলেন,আইজিপি স্যারের আদেশ ‘পুলিশই হবে জনগণের একমাত্র ভরসা স্থল’ আর সেই আদেশ বুকে ধারণ করে এগিয়ে যাচ্ছি। এসকল অভিযান পরিচালনা করার পেছনে এলাকায় বসবাসকৃত সচেতন মানুষেরা যথেষ্ট সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন। তাই আমরা সুন্দরভাবে কাজ করতে পেরেছি। তাই আল্লাহতালা যত দিন আমাকে এই স্থানে রেখেছেন ততদিন আমি পল্লবী থানা এলাকার জনসাধারণের নিরাপত্তায় নির্ঘুম কাজ করে যাব ইনশাআল্লাহ।

এবিষয়ে এস আই জহির আহমেদ বলেন, আমি ডিএমপিতে শ্রেষ্ঠ এসআই হিসেবে পুরস্কৃত হওয়ার পিছনে পল্লবী জোনের সহকারী পুলিশ কমিশনার (এসি) ও ওসি স্যারের কাছে আমি চির কৃতজ্ঞ। তাদের নির্দেশে থানা এলাকায় মাদক ও কিশোর গ্যাং নির্মুল সহ বিভিন্ন সফল অভিযান পরিচালনায় উত্তীর্ণ হওয়ায় এই সম্মানজনক পদকটি পেয়েছি। আগামীতেও অপরাধ নির্মূলে সৎ এবং নিষ্ঠার সাথে এভাবেই কাজ করে যাব।

পল্লবী থানা থানা এলাকায় বসবাসরত রিকশা চালক দিন ইসলাম বলেন, থানার ওসি স্যার অনেক ভালা, যেকোনো সমস্যা নিয়ে তার কাছে গেলে আমাগো খুব তাড়াতাড়ি সমাধান কইরা দেয়। আগে এলাকায় রাইতের বেলায় রিক্সা চালাইলে পোলাপাইন ধইরা টাহা-পয়সা রাইখা দিত। এই ওসি স্যার আসার পর আর কোন পোলাপান টাহা-পয়সা রাইখা নেয় না।

এভিনিউ – ৫ এলাকায় বসবাসরত আরেক বাসিন্দা মোস্তাকিম বলেন, আগে এলাকায় কিশোর গ্যাং, চাঁদাবাজি ও মাদক ব্যবসা প্রতিটি অলি গলিতে ছিলো। আর প্রতিদিন অস্ত্রের মহড়া চলত, এমনকি ছুরি দিয়ে কোপাকুপির মতো নৃশংস ঘটনা ঘটতো। এখন সেই সকল কিশোর গ্যাং এর উৎপাত কারিদের তেমন একটা দেখা যায়না। অলিগলির মাদক ব্যবসাও অনেকটা কমে গেছে। ওসি স্যার আসার পর থেকে এলাকায় যেন শান্তির হাওয়া বইতে শুরু করেছে।

মোমেনা নামে সবুজ বাংলার বাসিন্দা বলেন, আগে এই এলাকায় প্রচুর পরিমাণে চাঁদাবাজি হতো। কেউ বাড়ি কিনলে বা বিক্রি করলে দিতে হতো মোটা অংকের টাকা। এমনকি বাড়ির কোন প্রকার নির্মাণ কাজ করলেও চাঁদা দিতে হতো। আর এই চাঁদার টাকা না দিলেই নেমে আসতো বর্বর নির্যাতন এমনকি মিথ্যা মামলার পাহাড়। এলাকার প্রতিটি অলিতে-গলিতে চলত কিশোর গ্যাং ও তার মদদদাতাদের আনাগোনা। এখন এই সকল চাঁদাবাজদের আধিপত্য তেমন দেখা যায় না।

তিনি আরো বলেন, থানা পুলিশের অভিযানে এলাকার মাদক ব্যবসায়ী ও সেবনকারীরা প্রতিনিয়ত গ্রেপ্তার হচ্ছে। আস্তে আস্তে তারা এলাকা থেকে অন্য এলাকায় চলে যাচ্ছে। আমরা এখন পল্লবী থানা পুলিশের প্রতি পরিপূর্ণ আস্থা পাচ্ছি।

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published.

error: Content is protected !!