সন্দ্বীপে সফিক হত্যা মামলার প্রধান আসামী শীর্ষ সন্ত্রাসী মাহফুজ সহ আটক -৩

0 ২২৬

সন্দ্বীপ প্রতিনিধিঃ সন্দ্বীপ থানায় রুজু হওয়া একটি হত্যা মামলার প্রধান আসামী মাহফুজ (২৫) সহ ৩ জনকে পুলিশ আটক করেছে। সন্দ্বীপ থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মোহাম্মদ সোলাইমান এ প্রতিবেদককে বলেন- ২০২০ সালের ২৩ আগষ্ট, সন্দ্বীপ থানায় বাউরিয়া ৫ নং ওয়ার্ডের আমানিরগো বাড়ীর অবসরপ্রাপ্ত সেনা সদস্য সফিকুল ইসলাম (৭৮) হত্যায় একই বাড়ীর আপন ভাতিজা মাহফুজুর রহমান (২৫) কে প্রধান আসামী সহ আরো ৪ জনের নাম উল্লেখ করে একটি মামলা দায়ের হয়। ঘটনার পর থেকে এ হত্যা মামলার আসামীরা দীর্ঘদিন পলাতক ছিলো। সম্প্রতি যোগদানকৃত চট্টগ্রাম জেলার সীতাকুন্ড সার্কেলের এডিশনাল এসপি আশরাফুল করীমের দিক নির্দেশনায় সন্দ্বীপ থানার পুলিশ পরিদর্শক( তদন্ত) মোহাম্মদ সোলাইমান এর নেতৃত্বে সিএমপির পতেঙ্গা থানা ও চকবাজার থানা এলাকায় অভিযান চালিয়ে সফিক হত্যা মামলার প্রধান আসামী (১নং) মাহফুজ (২৫) ৩ নং আসামী পিতা-বেলায়েত হোসেন বেলু(৭৫) ও ভাই মাসুদ (৩৫) কে আটক করে ৫ ডিসেম্বর বিকেল সাড়ে ৫টায় সন্দ্বীপ থানায় নিয়ে আসা হয়। ঘটনার বিবরনে জানা যায়,সন্দ্বীপ বাউরিয়া ইউনিয়নের ৫ নং ওয়ার্ডস্থ আমানিরগো বাড়ীর ( অবঃ) সেনা সদস্য বড় ভাই সফিকুল ইসলামের সাথে ছোটো ভাই বেলায়েত হোসেন বেলুর দীর্ঘদিন ধরে বিভিন্ন বিষয়ে বিরোধ চলে আসছিলো। দন্ধ চরম আকার ধারন করলে গত ১১ আগষ্ট রাত ১টার দিকে বেলু ও বেলুর সন্তান শীর্ষ সন্ত্রাসী মাহফুজ তাঁর অন্য দুই ভাই কে নিয়ে কয়েক রাউন্ড ফাঁকা গুলি ছুড়ে সফিকের ঘরে হামলা করে। এ সময় সফিকের ছেলে পান্না আত্মরক্ষার্থে পালিয়ে যেতে সক্ষম হলেও সফিককে ধরে টেনে-হিঁচড়ে ঘরের বাইরে এনে সবাই মিলে ধারালো অস্ত্র দিয়ে এলোপাথারি কোপাতে থাকে। এ সময় ভয়ে কেউ তাকে উদ্ধারে এগিয়ে আসতে সাহস করেনি। সন্ত্রাসীরা চলে গেলে আশে-পাশের লোকেরা তাকে দ্রুত গাছুয়া হাসপাতালে নেয়ার ব্যাবস্থা করে। খবর পেয়ে রাত ৩ টার দিকে ঘটনাস্থলে পুলিশ আসে। এদিকে সফিকের অবস্থার অবনতি হলে ভোর রাতে তাকে উন্নত চিকিৎসার্থে প্রথমে চট্টগ্রাম মেডিকেলে এবং পরে ঢাকার পঙ্গু হাসপাতালে প্রেরন করা হয়। জানা গেছে সন্ত্রাসীদের ধারালো অস্ত্রের আঘাতে সফিকের সারা শরীরে ৪০ টিরও অধিক মারাত্মক ক্ষতের সৃষ্টি হয়েছিল। সেখানে ৭ দিন মুমুর্ষ অবস্থায় চিকিৎসাধীন থাকার পর ১৯ আগষ্ট সফিক মৃত্যুবরন করেন। স্থানীয় সুত্রে জানা গেছে, এ ঘটনার দু’মাস আগে ৫ জুন রাত সাড়ে আটটায় বাউরিয়া আমানির গো বাড়ীর সামনের দোকানে প্রথম দফায় হত্যা চেষ্টার উদ্দেশ্যে পান্না ও তার বাবার উপর মাহফুজ গং ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে মারাত্মক জখম করে। ভয়ে কেউ তাদের উদ্ধারে এগিয়ে আসেনি। পরে আহত অবস্থায় প্রথমে তাদের গাছুয়া হাসপাতালে নেয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসকদের পরামর্শে মধ্যরাতেই তাদের চট্টগ্রাম মেডিকেলে নিয়ে যাওয়া হয়। তারা মেডিকেলে চিকিৎসাধীন থাকা অবস্থায় ২২ জুন রাতে মাহফুজ গং পান্নাদের ঘর ডাকাতি করে বলে জানায় তারা।এ ঘটনায় পান্নার বাবা বাদী হয়ে সন্দ্বীপ থানায় অপরাধ সংঘটনকারীদের বিরুদ্ধে অভিযোগ এনে একটি মামলা দায়ের করেছিলেন। এলকা সুত্রে জানা গেছে, মাহফুজ বেশিরভাগ সময় চট্টগ্রাম থাকে।সন্দ্বীপে অপরাধ সংঘঠনের উদ্দেশে সন্ধ্যার আগে কিংবা পরে ভিন্ন রাস্তায় জেলেদের লাল বোটে করে সন্দ্বীপ আসে।চুরি- ডাকাতি করে( বিশেষ করে প্রবাসী ও অবস্থাসম্পন্নদের বাড়ীতে) আবার ভোর রাতে চম্পট দেয়। এ জন্য এলাকায় কিশোর গ্যাং সহ দুটি সহযোগী সন্ত্রাসী গ্রুপ রয়েছে। সে ইয়াবা মাদকের একজন হোল সেলার বলেও জানা গেছে। তার গ্রেফতারে এলাকায় স্বস্তির নিঃশ্বাস নেমে এসেছে এবং এলাকাবাসী সফিক হত্যার দৃষ্টান্তমুলক শাস্তি চায়।সন্দ্বীপের সফিক হত্যার প্রধান আসামী মাহফুজ সহ ৩ আসামী পুলিশের হাতে গ্রেফতার

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published.

error: Content is protected !!