সন্দ্বীপে রাতের আঁধারে চলছে শামীমের মাটি বিক্রির মহোৎসব।

0 ৭৯৭,৬০১

চট্টগ্রামের সন্দ্বীপ উপজেলায় রাতের আঁধারে সরকারি খালের পাড় এবং খাল সংলগ্ন কৃষি জমির মাটি কেটে বিক্রি করছে একটি সংঘবদ্ধ চক্র।রাজনৈতিক প্রভাবকে কাজে লাগিয়ে গত এক সপ্তাহ ধরে রাত ১০ টা থেকে সকাল ৬ টা পর্যন্ত চলছে মাটি কাটার মহোৎসবগুপ্তছড়ার শামীমের নেতৃত্বে এই মহা উৎসব চলছে বলে জানা গেছে।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায় যে,গত ২ এপ্রিল রাত ১১টায় উপজেলার মগধরা ইউনিয়নের ১ নং ওয়ার্ডের নোয়াবাঁধ এলাকার গুপ্তছড়া খাল থেকে এক্সেভটর(মাটি কাটার যন্ত্র) দিয়ে সরকারি খালের পাড় এবং খালের পাড় সংলগ্ন কৃষিজমি থেকে ২০ ফুট গভীর করে মাটি কাটা হচ্ছে।১৫ টি ট্রাকে করে উপজেলার প্রধান সড়ক গুপ্তছড়া সড়ক হয়ে এসব মাটি নিয়ে যাওয়া হচ্ছে পাশ্ববর্তী হারামিয়া ইউনিয়নের ক্যাপ্টন ভিলায় পুকুর ভরাটের জন্য।ট্রাক পারাপারের জন্য সরকারি খালের উপর বাঁধ দিয়ে তৈরি করা হয়েছে রাস্তা।

মাটি কাটার কাজে নিয়োজিত এক্সেভেটর চালক এবং একাধিক ট্রাক চালকের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়,আব্দুল বাকের ও মো. শামীম নামের দুজন মাটি ব্যবসায়ীর নেতৃত্বে চলছে মাটি কাটার কাজ।কৃষি জমির মালিকের কাছ থেকে ১০ টাকায় জমির মাটি কিনে প্রতি ট্রাক মাটি ১৫০০ টাকায় বিক্রি করা হয়।প্রতিদিন গড়ে ২০০ ট্রাক মাটি বিক্রি হয়।

উপজেলার প্রধান সড়ক গুপ্তছড়া সড়কের দুই পাশে শতাধিক পরিবারের বসবাস।এলাকাবাসী অভিযোগ করে বলেন,সারাদিন রোজা রেখে,রাতে ঘুমাতে যাওয়ার সময়ই শুরু হয় ট্রাকের উৎপাত।রাতভর ট্রাকের উচ্চশব্দে কেউ ঘুমাতে পারে না।সেহেরীর পরও সকাল ৬ টা পর্যন্ত এদের অত্যাচার চলতে থাকে।

অবৈধভাবে সরকারি খালের পাড় ও কৃষি জমির মাটি কাটার বিষয়ে জানতে চাইলে মো. শামীম বলেন,আমরা জমির কাগজপত্র উপজেলা ভূমি কর্মকর্তা ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে জমা দিয়ে মাটি কাটা ও বিক্রির মৌখিক অনুমতি নিয়েছি।

অবৈধভাবে সরকারি খালের পাড় ও কৃষি জমির মাটি কাটার বিষয়ে জানতে চাইলে একই কথা বললেন আবদুল বাকেরও।আমরা এসিল্যান্ড এবং ইউনো থেকে মৌখিক অনুমতি নিয়ে নিজের জমি থেকে মাটি কেটে বিক্রি করি।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে উপজেলা নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও সহকারী কমিশনার(ভূমি)মো. মাঈন উদ্দিন বলেন, সরকারি খালের পাড় ও ফসলি জমির মাটি কাটা শাস্তিযোগ্য অপরাধ।আবদুল বাকের ও মো. শামীম নামের কাউকে মাটি বিক্রির অনুমতি দেওয়ার প্রশ্নই আসে না। অতিদ্রুত তাদের বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনা করা হবে।

মাটি কাটা ও বিক্রির অনুমতি দেওয়া প্রসঙ্গে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সম্রাট খীসা বলেন,অনুমতি দেওয়ার আইনগত কোন সুযোগ নেই।কোনপ্রকার অনুমতি আমরা দিইনি।গত পরশুও রাত দেড়টায় রহমতপুর এলাকায় আমরা অভিযান পরিচালনা করেছি।মাটি কাটার কোন খবর পেলে তাৎক্ষণিক অভিযান পরিচালনা করা হবে।

এদিকে সাংবাদিকদের সন্দ্বীপ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সম্রাট খীসাকে এইসব অবৈধ মাটি কাঁটার বিষয়ে তথ্য দিলেও তিনি কোন রকম ব্যবস্থা নেন না।এমনকি ফোন পর্যন্ত রিসিভ করেন না তিনি।

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published.

error: Content is protected !!